করোনায় চট্টগ্রামে ৪ জনের মৃত্যু

157

চট্টগ্রাম, ২৫ মে, ২০২১ (বাসস) : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন ৯৩ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আরোগ্যলাভ করেন ১৪৫ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ৭৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্তদের মধ্যে শহরের ৬৪ জন ও ছয় উপজেলার ২৯ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ১০, সীতাকু-ে ৮, রাউজানে ৫, বোয়ালখালীতে ৩, ফটিকছড়িতে ২ এবং লোহাগাড়ায় ১ জন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৫২ হাজার ৭৩৬ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে ৪২ হাজার ১১৬ শহরের ও ১০ হাজার ৬২০ জন গ্রামের।
গতকাল করোনায় চার জন মারা যান। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৬০২ জন হয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ৪৩৪ জন ও গ্রামের ১৬৮ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ১৪৫ জন। এতে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৯ হাজার ১১২ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজার ৫৮৮ জন এবং বাসা থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩৩ হাজার ৫২৪ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ৫৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩৭১ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের চার জনসহ চলতি মে মাসের ২৪ দিনে চট্টগ্রামে ৭৮ করোনা রোগির মৃত্যু হয়। তবে গতকালের চারজনই ছিলেন গ্রামের । এর আগের দিনও যে চার জনের মৃত্যু হয় এদের ৩ জন ছিলেন গ্রামের। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৮ জন মারা যান ৮ মে। ২১ মে মৃত্যুশূন্য ছিল একদিন। একজন করে মারা যান চার দিন। গত এপ্রিল মাসে তিন দিন মৃত্যুশূন্য ছিল। পুরো মাসে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে আক্রান্তের পরিসংখ্যানে গ্রামে করোনার প্রকোপ দ্রুত বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে গতকাল আক্রান্তের চেয়ে আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা অনেক বেশি এবং নতুন আইসোলেশনের চেয়ে করোনামুক্তির ছাড়পত্র গ্রহীতাও বেশি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৩২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ও গ্রামের ৮ জন করে জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২০১টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩টিসহ ২৭টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১২৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৬ জন ও গ্রামের ১৫ জন নতুন বাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের একজনসহ ৭ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ৪২টি নমুনা পরীক্ষা হলে গ্রামের একটিসহ ১০টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
নগরীর বেসরকারি চার ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরন ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে গতকাল কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৭টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের একটিসহ ১০টি এবং মেডিকেল সেন্টারে ৯টি নমুনার মধ্যে শহরের ২টিতে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এদিন চট্টগ্রামের ৬ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ, সিভাসু’তে ১৩ দশমিক ৪৩, চবিতে ১৬ দশমিক ৪০, চমেকে ৩৩ দশমিক ৩৩, আরটিআরএলে ২৩ দশমিক ৮১, মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৭ দশমিক ০৪, মেডিকেল সেন্টারে ২২ দশমিক ২২ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ০ শতাংশ সংক্রমণ রেকর্ড হয়।