বুড়িচংয়ে খাল খননের ফলে অনাবাদি জমিতে ফলবে ফসল

184

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২২ মে, ২০২১, (বাসস) : জেলার বুড়িচং উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ অনাবাদি ফসলের মাঠ থেকে জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে। সম্প্রতি খাল খননের ফলে এসব অনাবাদি জমিতে ফলবে অন্তত: ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফসল।
জেলার বুড়িচং উপজেলার একটি বিস্তীর্ণ অনাবাদি ফসলের মাঠ ‘পয়াতেরজলা’। যেখানে জলাবদ্ধতার কারণে ২০ বছর ধরে অনাবাদি ৫ হাজার কৃষকের ১২ হাজার একর তিন ফসলী জমি। বুড়িচং উপজেলার সদর, বাকশীমুল, ষোলনল ও রাজাপুর ইউনিয়নের একটি বিশাল অংশ নিয়ে পয়াতের জলা। আর অবৈধ দখল ও বিভিন্ন অংশে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণের ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছিলো ঘুংঘুর ও পাগলী নদীর শাখা ‘পয়াতের খাল’। এতে করে উপযুক্ত নিষ্কাশন পথের অভাবে পানি বের হতে পারছিল না। ফলে, কখনো জলাবদ্ধতা, কখনো সেচের অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে অনাবাদি ছিলো বিস্তীর্ণ ফসলের এ মাঠ। ওই এলাকার কৃষি ও কৃষকের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছিলো খালটি। কৃষকগণ পয়াতের জলায় লাগাতে পারতেন না রোপা-আমন কিংবা বোরো ধানও। কখনো কখনো এসব জমিতে এক ফসল হলেও বেশিরভাগ সময়ই নষ্ট হয়ে যেত কৃষকের ফসল।
সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষিউন্নয়ন কর্পোরেশন বিএডিসির উদ্যোগে দখল মুক্ত করে খালটি খননের ফলে, দূর হয়েছে ওই এলাকার কৃষকের দীর্ঘদিনের সমস্যা। এসব অনাবাদি জমিতে ফলবে অন্তত: ৩০ হাজার মেট্রিকটন ফসল। উপকৃত হবে পাঁচ হাজার কৃষক পরিবার। পরিবার গুলোতে সুদিনের আশায় খুশির আমেজ বইছে।
বিএডিসির ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের বুড়িচং ইউনিটের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মানিক মিয়া বাসসকে জানান, চলতি বছরের শুরুতে মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে জলার চারপাশের খালের ২৫ কি.মি.খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ এলাকার কৃষকের দুর্ভোগ এখন নিরসন হবে পয়াতের খাল খননের মধ্যদিয়ে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, যেখানে খাল কাটা হয়েছে সেখানের পাশের মাঠে সবুজ ফসল বাতাসে দোল খাচ্ছে। ফসলের মাঠে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও বকের ঝাক উড়ে বেড়াচ্ছে। খাল কাটা হওয়ায় খুশি এলাকার কৃষকরা।
স্থানীয়রা কৃষকরা জানান, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারণে পয়াতের জমি গুলোতে একদিকে যেমন জোঁকের উপদ্রব বেড়েছে অন্যদিকে আগাছা জন্মে তা পরিত্যক্ত অবস্থায় চারণভূমিতে পরিণত হয়েছিলো। খাল খননের ফলে এসব সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং উৎপাদিত ফসল খননকৃত খালের পাড় দিয়ে সহজেই পরিবহন করে কৃষকের বাড়ীতে নিতে পারবে। এতে এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটবে।
আর বিএডিসির কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাসসকে জানান, করোনা মহামারীর মধ্যেও দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার অংশ হিসেবে মুজিব শতবর্ষে পয়াতের খাল খননের মধ্য দিয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ১২ হাজার একর অনাবাদি জমি চাষের উপযোগী করা হচ্ছে। সে সাথে কিছু জমি আসবে তিন ফসলের আওতায়। এ মাঠে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের ৫ হাজার কৃষকের হাহাকার শেষ হবে বলেও মনে করেন তিনি।