বাসস দেশ-১১ : চট্টগ্রামে যানজট নিরসনে ছয় সড়ক প্রশস্ত করার পরিকল্পনা সিডিএ’র

128

বাসস দেশ-১১
সিডিএ-পরিকল্পনা
চট্টগ্রামে যানজট নিরসনে ছয় সড়ক প্রশস্ত করার পরিকল্পনা সিডিএ’র
॥ কলিম সরওয়ার ॥
চট্টগ্রাম, ২১ মে, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরীর সুনির্দিষ্ট কিছু এলাকায় নিত্য যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ছয়টি সড়ক প্রশস্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
এই সড়কগুলো হলো : গণি বেকারি থেকে কাজীর দেউড়ি, কাজীর দেউড়ি থেকে গোলপাহাড় মোড়, লাভলেন থেকে চেরাগী পাহাড় মোড় হয়ে নন্দনকানন, ফিরিঙ্গীবাজার থেকে সদরঘাট মোড়, কমার্স কলেজ মোড় থেকে মাদারবাড়ি-বারিক বিল্ডিং মোড় এবং বহদ্দারহাট থেকে অক্সিজেন-কুয়াইশ রোড।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বাসস’কে বলেন, ‘অপ্রশস্ত সড়কের কারণে নগরীর কয়েকটি এলাকায় প্রতিদিন অস্বাভাবিক যানজট হচ্ছে। আমরা সড়কগুলো প্রশস্ত করার পরিকল্পনা করেছি। বর্তমানে ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ চলছে। এরপর ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। গুরুত্ব ও প্রয়োজন তুলে ধরে প্রকল্পগুলো তাঁর নজরে আনা গেলে তিনি অবশ্যই এগুলো অনুমোদন দেবেন বলে আমার বিশ^াস।’
নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রয়োজনের অনুপাতে রাস্তার পরিমাণ ও হার কম। স্বাভাবিকভাবে বিশ্বমানের একটি নগরীতে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত রাস্তা থাকে। সেখানে চট্টগ্রাম মহানগরীতে রাস্তা আছে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ, যা শুধু বিশ্বমানেই নয়, নূন্যতম প্রয়োজনের তুলনায়ও কম।
সিডিএ সূত্রে জানিয়েছে, সড়কের অপ্রতুলতার বিষয়টি মাথায় রেখে সিডিএ ইতিমধ্যে অনেকগুলো রাস্তা ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে। কিন্তু নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত কিছু সড়ক এখনো অপ্রশস্ত থেকে যাওয়ায় যানজট জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ চিন্তা করে সিডিএ ছয়টি রাস্তা সম্প্রসারণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রতিটি রাস্তা ৬০ ফুট প্রশস্ত করা হবে। এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প-লুপ বাদামতলী মোড় ও কমার্স কলেজ রোডে যুক্ত হবে। কমার্স কলেজের পাশ দিয়ে কদমতলীর দিকে বয়ে যাওয়া সড়কটি ৬০ ফুট করা গেলে নগরীর এ অংশের বাসিন্দারা সহজে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। শেখ মুজিব রোডেও গাড়ির চাপ কমবে।
প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের পাশাপাশি সিডিএ আউটার রিং রোড দ্বিতীয় প্রকল্প এবং জাকির হোসেন রোড হয়ে আগ্রাবাদ এক্সেস রোড পর্যন্ত ও বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের পিছন থেকে অনন্যা আবাসিক হয়ে কালুরঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারণের তৃতীয় আরেকটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বাসস’কে জানান, ‘রাস্তা প্রশস্ত করার একমাত্র উদ্দেশ্য যানজট নিরসনের মাধ্যমে নগরীকে বাসযোগ্য ও স্বস্তিদায়ক করে তোলা। এক্ষেত্রে সিডিএ ফ্লাইওভার এবং কিছু রাস্তা করলেও নগরীর যানজট বহুলাংশে রয়ে গেছে। বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা ছয়টি রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আমার বিশ^াস, এ ছয় সড়ক প্রশস্ত হলে নগরীতে যানচলাচলের গতি স্বস্তিদায়ক হবে।’
সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী শামস আরও বলেন, ‘প্রকল্প নিয়ে বারবার মন্ত্রণালয়ে দৌড়ানো যায় না। এ কারণে আমরা তিনটি প্রকল্প একসাথে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি।’
তিনি জানান, ‘দ্বিতীয় প্রকল্পে আউটার রিং রোডকে সীতাকু- পর্যন্ত চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হবে। এছাড়া, সড়কটি টানেল থেকে শুরু হয়ে মিরসরাই ইকনোমিক জোন পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। পাশাপাশি বড়পোল থেকে একটি ফিডার রোড এই সড়কে যুক্ত হবে। নর্থ-সাউথ ১ ও নর্থ-সাউথ ২ নামে দু’টি প্রকল্পকে একীভূত করে তৃতীয় প্রকল্পের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এতে জাকির হোসেন রোডকে আগ্রাবাদ এক্সেস রোড পর্যন্ত টেনে দেয়া হবে। অন্যদিকে, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের পিছন থেকে অনন্যা আবাসিক এলাকা হয়ে একটি সড়ক কালুরঘাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দু’টি সড়কই ৬০ ফুট প্রশস্ত করে করা হবে।’
সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘কোভিডের কারণে এখন সময়টি খারাপ যাচ্ছে। আকস্মিক এ বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা কম ছাড় করে সরকারকে এদিকে মনযোগ দিতে হচ্ছে। টিকা, পরীক্ষা কিট, ওষুধ, গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজে সরকারি কোষাগার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। আমরা আশা করি, আগামী বছরের মধ্যে এ মহামারি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এ সময়ের মধ্যে ফিজিবিলিটির কাজ শেষ করে আমরা ডিপিপি জমা দিতে পারবো।’
বাসস/কেএস/১৪৩০/-এমএন