প্রিমিয়ার লিগ: লিস্টারকে হারিয়ে তিনে উঠে এলো চেলসি, ব্রাইটনের কাছে পরাজিত সিটি

226

লন্ডন, ১৯ মে, ২০২১ (বাসস) : শীর্ষ চারের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী লিস্টার সিটিকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত করে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের তিনে উঠে এসেছে চেলসি। একই সাথে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জায়গা ধরে রাখার পথে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে ব্লুজরা। এ দিকে দিনের আরেক ম্যাচে ইতোমধ্যেই শিরোপা জয় করা ম্যানচেস্টার সিটিকে দারুন এক লড়াইয়ের পর নাটকীয় ম্যাচে ৩-২ গোলে পরাজিত করেছে ব্রাইটন।
মঙ্গলবার থেকে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচগুলোতে সীমিত ভাবে হলেও দর্শকদের মাঠে ফেরাটা ছিল ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্রিটিশ সরকার করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করায় ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মত প্রিমিয়ার লিগে দর্শকরা মাঠে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল। লিস্টারকে হারিয়ে তৃতীয় স্থানে ওঠা স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে বসে উপভোগ করেছে ৮ হাজার চেলসি সমর্থক। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন সিটিকে হারানোর স্মরণীয় ম্যাচটির সাক্ষ্মী হয়ে থাকলো ৭৯০০ ব্রাইটন সমর্থক। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ফুলহ্যামের সাথে ১-১ গোলের ড্র হওয়া ম্যাচে ১০ হাজার ইউনাইটেড সমর্থকের উপস্থিতি ছিল। লিডসের বিপক্ষে অবশ্য ২-০ গোলের পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ৮ হাজার সাউদাম্পটন সমর্থক।
শনিবার লিস্টারের কাছে এফএ কাপের ফাইনালে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল চেলসি। কাল যেন তার মধুর প্রতিশোধই নিল থমাস টাচেলের শিষ্যরা। ৪৭ মিনিটে এন্টোনিও রুডিগারের গোলে ডেডলক ভাঙ্গে চেলসি। জর্জিনহোর স্পট কিকে ৬৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন হয। টিমো ওয়ার্নারকে ফাউলের অপরাধে ওয়েসলি ফোফানার বিপক্ষে পেনাল্টির নির্দেশ দেয় ভিএআর। ৭৬ মিনিটে কেলিচি ইহেনাচোর গোলে লিস্টার এক গোল শোধ করার পর ম্যাচটিতে কিছুটা উত্তেজনা ফিরে আসে। কিন্তু চেলসি নিজেদের শক্ত অবস্থানে রেখে শেষ পর্যন্ত দারুন এক জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। রোববার মৌসুমের শেষ ম্যাচে এস্টন ভিলার বিপক্ষে জিততে পারলে তৃতীয় স্থানেই থেকেই এবারের লিগ শেষ করবে চেলসি।
ম্যাচ শেষে টাচেল বলেছেন, ‘সমর্থকরা আজকের ম্যাচে অনেক বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। তাদের কারনেই আমাদের জয়ের ক্ষুধা, গতি বেড়ে গিয়েছিল। এটা সত্যিকার অর্থেই একটি শক্তিশালী পারফরমেন্স ছিল। এখনো সব কাজ শেষ হয়নি। কিন্তু তারপরেও আমরা বলবো লক্ষ্যের অনেকটাই কাছাকাছি আমরা চলে এসেছি। এ্যাস্টন ভিলার মাঠে আরো একটি ভাল পারফরমেন্স করে দেখাতে হবে।’
প্রথমবারের মত এফএ কাপের শিরোপা জয়ী লিস্টার চেলসির থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে ও লিভারপুলের থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে। কিন্তু শেষ ম্যাচে ঘরের মাঠে টটেনহ্যামের কাছে পরাজিত হলে টানা দ্বিতীয় মৌসুমের মত শেষ চার থেকে ছিটকে যেতে পারে লিস্টার। বুধবার বার্নলির বিপক্ষে জিতলে গোল ব্যবধানে এগিয়ে যাবে লিভারপুর। শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ক্রিস্টাল প্যালেস।
লিস্টার বস ব্রেন্ডন রজার্স বলেছেন, ‘অবশ্যই আমরা গোলগুলো নিয়ে হতাশ। একটি বাজে কর্ণার থেকে আমরা প্রথম গোলটি হজম করেছি। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। এখনো আমরা শীর্ষ চারে আছি। হাতে রয়েছে আর একটি মাত্র ম্যাচ। সেই ম্যাচে জেতার পরেও শীর্ষ চারে টিকে থাকাটা যদি ব্যর্থ হয় তবে আমাদের সেটাই মেনে নিতে হবে। এখনো আমি বলবো এবারের মৌসুমটা দারুন কেটেছে।’
আগামী ২৯ মে পোর্তোতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে চেলসির মোকাবেলা করার আগে ম্যানচেস্টার সিটি প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ঘরে তুলে দারুন ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। কিন্তু গত তিন ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মত পরাজয়ে পেপ গার্দিওলার দল সমর্থকদের হতাশ করেছে। এ্যামেক্স স্টেডিয়ামে দ্বিতীয়ার্ধে কাল সিটিজেনরা মুখ থুবড়ে পড়ে। রিয়াদ মাহারেজের ক্রস থেকে ম্যাচ শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে ইকে গুনডোগান সিটিকে এগিয়ে দেয়। ড্যানি ওয়েলবেককে ফাউলের অপরাধে সিটি ডিফেন্ডার হুয়াও ক্যান্সেলো ১০ মিনিটে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন। ৪৮ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় ব্যবধান দ্বিগুন করেন ফিল ফোডেন। পরের মিনিটেই লিনড্রো ট্রোসার্ড ব্রাইটনের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন। ৭২ মিনিটে দুর্দান্ত এক হেডে এ্যাডাম ওয়েবস্টার স্বাগতিকদের হয়ে সমতা ফেরান। ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো বাকি। চার মিনিট পর ড্যান বার্ন পোস্টের খুব কাছে থেকে ব্রাইটনের দুর্দান্ত জয় নিশ্চিত করেন।
ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘ব্রাইটন ও তাদের সমর্থকদের অভিনন্দন। আমি লাল কার্ডের ঘটনাটি দেখিনি। একটি কথাই বলবো ইতোমধ্যেই আমরা শিরোপা জয় করেছি এবং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আজ খেলতে নেমেছি।’
ওল্ড ট্রাফোর্ডে কাল সমর্থকরা অনেকটাই শান্ত পরিবেশ ধরে রেখে পুরো ম্যাচ উপভোগ করেছে। যদিও ইউনাইটেডের মালিক গ্লেজার পরিবারের উপর তাদের ক্ষোভ এখনো প্রশমিত হয়নি। ১৫ মিনিটে এডিনসন কাভানির গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৭৬ মিনিটে ববি ডিকোরডোভা-রেইডের গোলে সমতা ফেরায় ফুলহ্যাম।