চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ৫১ হাজার ছাড়ালো

196

চট্টগ্রাম, ৮ মে, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩ রোগির মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে ১৩৬ জনের দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণের হার ১৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এদিন জেলায় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৫১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। একই সাথে আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৭ হাজার অতিক্রম করে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের ৯৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ১৩৬ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১০১ জন ও পাঁচ উপজেলার ৩৫ জন। এর মধ্যে হাটহাজারীতে ৮ জন, রাউজান ও পটিয়ায় ৫ জন করে, বোয়ালখালী ও সাতকানিয়ায় ৪ জন করে, রাঙ্গুনিয়া ও সীতাকুন্ডে ৩ জন করে, আনোয়ারায় ২ জন এবং চন্দনাইশে ১ জন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৫১ হাজার ১৯ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪০ হাজার ৮৫৬ জন ও গ্রামের ১০ হাজার ১৬৩ জন।
করোনায় গতকাল শহরের একজন ও গ্রামের দু’জন মারা যান। চট্টগ্রামে মৃতের সংখ্যা এখন ৫৫৫ জন। এতে শহরের ৪১০ জন ও গ্রামের ১৪৫ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৯৬ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ৬২ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ২০৬ জন এবং হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩১ হাজার ৮৫৬ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে গতকাল যুক্ত হন ৪০ জন ও ছাড়পত্র নেন ৩৪ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৫২৭ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের ৩ জনসহ চলতি মে মাসের প্রথম সাতদিনে ৩১ করোনা রোগির মৃত্যু হলো। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার বৃহস্পতিবার কিছুটা কমলেও গতকাল আবার বেড়ে গেছে। গতকাল ৯৬ জন সুস্থতার ছাড়পত্র গ্রহণের মধ্য দিয়ে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৭ হাজার ৬২ জনে উন্নীত হয়।
এদিকে, এবার সাত দিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার পূর্ণ হয়েছে। সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল ১৮৫ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হলে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার ৯০ জনে। এদিন ৪ করোনা রোগির মৃত্যু হয়। এর আগে ৪৯ হাজার অতিক্রম করে চার দিনে। এদিন চট্টগ্রামে ২০৮ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয়ে মোট আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৯৫ জনে। ২১ এপ্রিল ২৭৮ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হলে করোনা রোগির সংখ্যা তিন দিনে ৪৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এ সময়ে করোনায় ৩ রোগির মৃত্যু হয়। ১৮ এপ্রিল ৪৭ হাজার অতিক্রম করে চার দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে। দুই দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে মোট আক্রান্ত ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৪ এপ্রিল। তিনদিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে ১২ এপ্রিল জেলায় করোনা রোগির সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ২৯১ জনে। এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার অতিক্রম করেছিল ৯ এপ্রিল। এ সময়ে পরপর পাঁচবার তিনদিনে করোনা রোগির হাজারপূর্ণ হয়। ৪৩ হাজার পার হয় ৭ এপ্রিল ও ৪২ হাজার অতিক্রম করে ৫ এপ্রিল। ২ এপ্রিল ৪০ থেকে ৪১ হাজারে যেতেও সময় লাগে ৩ দিন। অথচ, ৪০ হাজার পূর্ণ হয়েছিল ৩১ মার্চ। ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছিল ২৬ মার্চ। এর আগে ৩৮ হাজার পূর্ণ হয় ২২ মার্চ। ৩৭ হাজার পূর্ণ হয় ১৭ মার্চ। ৩৬ হাজার পূর্ণ হয় ১০ মার্চ। এর আগে ১ মার্চ ৩৫ হাজার পূর্ণ হয়। সে সময় এক হাজার পূর্ণ হতে ১৪ দিন লেগেছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার অতিক্রম করার সময় ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৪০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ৭ জনসহ ৪৩ জন করোনার জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৯১টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১৮ ও গ্রামের ১৬টিতে জীবাণু থাকার প্রমাণ মিলে। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে ১৬৬ জনের নমুনায় শহরের ২৫ ও গ্রামের ১২ জন ভাইরাসবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৬টি নমুনার মধ্যে ৩ জন করোনায় আক্রান্ত হন।
বেসরকারি চার ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করে শহরের ৯টি, মেডিকেল সেন্টারে ২৩টি নমুনার মধ্যে ৩টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২২টি নমুনায় শহরের ৭টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের ১৪ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে পরীক্ষায় সবগুলোরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল ও বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ, সিভাসু’তে ১৭ দশমিক ৮০, চবি’তে ২২ দশমিক ২৯, চমেকে ১৮ দশমিক ৭৫, ইম্পেরিয়ালে ১০ দশমিক ৩৪, মেডিকেল সেন্টারে ১৩ দশশিক ০৪ শতাংশ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।