জয়পুরহাটে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠছে

379

জয়পুরহাট, ৮ মে, ২০২১ (বাসস) : সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট জেলা শহর জয়পুরহাটে ঈদের কেনাকাটা বেশ জমে উঠেছে। বিভিন্ন মার্কেট, বিপণী বিতান, শপিংমল ও হকার্সপট্টি এখন ক্রেতা সমাগমে মুখোরিত। এবার দেশীয় কাপড়ের চাহিদা বেশি বলে জানালেন কাপড় বিক্রেতারা।
বিভিন্ন মার্কেট আজ শনিবার ঘুরে দেখা যায়, করোনা প্রাদুূর্ভাব সচেতনতায় সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক ব্যবহার বেশি লক্ষ্য করা যায়। ঈদ যত কাছাকাছি আসছে ততই বাড়ছে কেনাকাটা। দিন রাতে সুবিধামত সময়ে লোকজন যাচ্ছেন মার্কেটে, বিপণী বিতান ও শপিংমলে। ফলে ক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে পূর্ব বাজারের বড় বড় কাপড় ও শপিংমলসহ অন্যান্য কসমেটিকস, জুতা ও সাধারণ কাপড়ের দোকান-পাঠ গুলো। নারী, পুরুষ, শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কিনছেন তাদের পছন্দসই সামগ্রী। ক্রেতারা এখন পোশাক সামগ্রী কিনলেও প্রসাধনী ও জুতোর দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে আসা ক্রেতাদের ভিঢ়ে শহরে সৃষ্টি হয় যানজটের। কেনা-বেচা চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। জেলা শহরের নিউমার্কেট, সদর রাস্তা, পূর্ব বাজার কাপড় পট্টি, এনামুল হক মার্কেট, মীনা বাজার ও হকার্স পট্টির, মৌসুমী, শাহাজান আলী মার্কেট সহ বিভিন্ন দোকান-পাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা বাড়তি কথা বলার সময় পাচ্ছেন না। রোজা শুরুর পর লকডাউন থাকায় বেচা-বিক্রিতে একটু ভাটা পড়লেও এখন দোকান পাঠের জন্য লকডাউন শিথীল করায় শেষ পর্যায়ের বেচা কেনা চলছে পুরো দমে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। দেশী শাড়ির মধ্যে সিল্ক, কাতান ও টাঙ্গাইলের শাড়ির চাহিদার পাশাপাশি লেহেঙ্গা , গ্রাউন, থ্রিপিস , স্কাট ও বেবী সেট মেয়েদের পোশাকের চাহিদা এবার বেশি বলে জানালেন বাবুল গার্মেন্টসের মালিক বাবুল করিম। ছোট শিশুদের জন্যও রয়েছে বেবী সেট ও গেঞ্জি সেট। বিভিন্ন মাপের গামের্ন্টস পোশাক বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বলে জানান পূর্ব বাজার বাবু গার্মেন্টসের মালিক মাসুদ পারভেজ বাবু। লেডিস ওয়ার্ল্ড এর মালিক জাহেদা কামাল বলেন, আগের চেয়ে এবার কাপড়ের কোয়ালিটি অনেক ভাল সে তুলনায় দাম খুব বেশি নয়। থ্রি পিস ৫ শ থেকে ২ হাজার ৫ শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। সাজ লেডিস কালেকশনের মালিক নাসরিন আকতার বলেন, ক্রেতারা তাদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করে কেনাকাটা করছেন। তবে দূর পাল্লার যানবাহন না থাকায় দোকানের মালামাল নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন তারা। ৫শ টাকা পিস থেকে শুরু করে ৪ হাজার ২শ টাকার মধ্যে বেশী বিক্রি হচ্ছে। পূর্ব বাজার কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি শফি বিশ্বাস বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা বেচার কাজ চলছে। মাস্ক না থাকলে কাউকে দোকানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা বলেও জানান তিনি।
নিউমার্কেট, বিপণীবিতান ও শপিংমল ছাড়াও রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে ও রাস্তার পাশের ছোট দোকান গুলো থেকে কেনাকাটা করছেন নি¤œ আয়ের ক্রেতারা তাদের সামর্থ অনুযায়ী। বিশ্বাসপাড়ার শিশু ফাইয়াজ ইসলাম জানান, থ্রি-কোয়াটার প্যান্ট ও সু কেনেছেন এবারের ঈদে। মন্ডলপাড়ার রবিউল ২৮০০ টাকার মধ্যে দুটি পাঞ্জাবী, একটি টাউজার কিনলেও দাম বেশি হয়নি বলে তিনি জানান। জুতার দোকানগুলো ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে ১০ থেকে ৫০% পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে। নিউ মার্কেটের ফেমাস টেইলার্সের মালিক আলহাজ্ব মকবুল হোসেন বলেন, গামের্ন্টস কাপড় বেশি বিক্রি হলেও টেইলার্সে অনেক কাপড় আসছে। সময় মত ডেলিভারী দেওয়ার জন্য কাপড় বুকিং নেয়া বন্ধ করা হয়েছে। এবার সেলাইয়ের জন্য সার্ট প্রতি ৩৫০-৪০০ টাকা, প্যান্ট ও পাঞ্জাবী সেলাই প্রতিটি ৪শ-৫শ টাকা মজুরী নেওয়া হচ্ছে। জেলা শহরের প্রায় শতাধিক টেইলার্সের শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান তিনি। ঈদের কেনাকাটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে মার্কেট গুলোতে।