মারা গেলেন দেশের ক্রিকেটের অগ্রদূত কে জেড ইসলাম

253

ঢাকা, ৪ মে ২০২১ (বাসস) : মারা গেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি কামাল জিয়াউল ইসলাম, যিনি কে জেড ইসলাম নামে বেশি পরিচিত। তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে যার অবদান সবচেয়ে বেশি ছিলো। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ৮৬ বছর।
বাংলাদেশে প্রথম স্কুল-ক্রিকেট প্রতিযোগিতার প্রবর্তন করেছিলেন কে জেড ইসলাম। তার উদ্যোগের মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্রিকেটার, যারা পরবর্তীতে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
সাবেক রিয়েল এস্টেট চৌম্বক সংস্থা নির্মান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে টুর্নামেন্টের অর্থায়ন করেছেন এবং টুর্নামেন্টটির নাম ‘নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’ দিয়েছিলেন কে জেড ইসলাম।
হাবিবুল বাশার সুমন, খালেদ মাহমুদ সুজন এবং জাভেদ ওমর বেলিম গোল্লার মত দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু ক্রিকেটার টুর্নামেন্টের প্রথম ব্যাচ থেকে উঠে এসেছিলেন।
ঢাকা লীগে নির্মান একাদশ ক্রিকেট দলও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কামাল। ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে উন্নীত হয়েছিলো। একসময় নর্দহ্যাম্পটনশায়ারের অ্যালান ফোর্ডহ্যামকে নির্মানের ক্রিকেটে খেলোয়াড়-কোচ হিসাবে নিয়োাগ দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি দলের তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য একটি ব্যক্তিগত ইংল্যান্ড সফরের ব্যবস্থাও করেছিলেন কে জেড ইসলাম।
ইংল্যান্ডের ঐ সফরে নির্মান একাদশের অধিনায়ক ছিলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ও বোর্ড ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। ঐ দলের সাথে ছিলেন- হাবিবুল বাশার সুমন, জাভেদ ওমর, আনিসুর রহমান, হালিম শাহসহ আরও অনেকে।
ঐ স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক বাশার বলেন, ‘ তিনি ছিলেন অনন্য দর্শন ও লক্ষ্যের অধিকারী এক ব্যক্তি। সেই সময়ে যখন ক্রিকেট তার নিজস্ব প্লাটফর্ম তৈরি করতে লড়াই করছিলো তখন বিশাল স্পন্সর নিয়ে এসে তৃণমূল পর্যায়ে খেলাটি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অনেককে জাতীয় কোচের অধীনে কোচিং করতে সহায়তা করেছিলেন এবং ইংল্যান্ডেও আমাদের জন্য সফরের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। তার কাজের প্রতি দেশের ক্রিকেটের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।’
১৯৮৩ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে ১৯৮৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কে জেড ইসলাম বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যা বিসিসিবি নামে পরিচিত ছিলো।
কে জেড ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিসিবির বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান, এমপি। দেশের ক্রিকেটে ইসলামের অবদানের কথা স্বীকার করে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘তিনি ছিলেন একজন অগ্রগামী এবং তার দৃষ্টি ও বিশ্বাসের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট চিরকাল তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। ক্রিকেট খেলা পেশাদারিত্ব থেকে দূরে ছিলো, তবে নির্মান স্কুল টুর্নামেন্টের সাথে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে উৎসাহিত করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার মতো সম্পদশালী ব্যক্তিত্বের কারণে অনেক উদীয়মান খেলোয়াড় ক্রিকেটার হবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে এবং ক্রিকেটকে দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছেছিল। বোর্ডের পক্ষে আমি কে জেড ইসলামের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’
প্রয়াত কে জেড ইসলামের শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসাবে, আজ পতাকা অর্ধ-নমিত রেখেছে বিসিবি।
ক্রিকেটকে অবদান রেখে এবং নির্দিষ্ট উচ্চতায় নিয়ে আসার পর গত দুই দশকের বেশিরভাগ সময় একাকী জীবন কাটিয়ে মারা যান কে জেড ইসলাম।