মেসির জোড়া গোলে বার্সেলোনার কষ্টার্জিত জয়

207

মাদ্রিদ, ৩ মে ২০২১ (বাসস) : পেনাল্টি মিস করেও শেষ পর্যন্ত দুই গোল করে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে সোমবার বার্সেলোনাকে গুরুত্বপূর্ণ জয় উপহার দিয়েছেন লিওনেল মেসি। মেস্তালায় পাঁচ গোলের উত্তেজনাকর লড়াইয়ে বার্সেলোনা ৩-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।
রোববার নিজেদের ম্যাচে শীর্ষে থাকা অপর দুই দল এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ও রিয়াল মাদ্রিদ উভয়ই জয়ী হওয়ায় শিরোপা লড়াইয়ে টিকে থাকতে বার্সেলোনার সামনে জয় ভিন্ন বিকল্প পথ খোলা ছিলনা। এই জয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকা এ্যাথলেটিকোর থেকে পয়েন্টের ব্যবধান দুইয়ে কমিয়ে এনেছে বার্সা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের সাথে সমান ৭৪ পয়েন্ট অর্জণ করেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে কাতালান জায়ান্টরা তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। হাতে রয়েছে আর মাত্র চারটি ম্যাচ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গাব্রিয়েল পলিস্তা ভ্যালেন্সিয়াকে এগিয়ে দেবার পর মেসি পেনাল্টির সুযোগ মিস করেন। যদিও এই আক্রমনেই গোল করে নিজের ভুলের প্রতিদান দিয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। এরপর গ্রীজম্যানের গোলে এগিয়ে যাবার পর দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে মেসি বার্সেলোনার জয় প্রায় নিশ্চিতই করে ফেলেছিলেন। কিন্তু ৮৩ মিনিটে কার্লোস সোলারের দুর্দান্ত স্ট্রাইকে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে নার্ভাস বার্সাকে। আগামী শনিবার দিয়েগো সিমিওনের দলকে ক্যাম্প ন্যুতে হারাতে পারলে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচ শেষে জেরার্ড পিকে বলেছেন, ‘আমর জানি এখন আর পয়েন্ট হারানোর কোন সুযোগ নেই। এখনো আমরা লড়াইয়ে টিকে রয়েছি। বাজে একটি ম্যাচ যেকোন সময় আমাদের লড়াই থেকে ছিটকে দিতে পারে।’
টেবিলের শীর্ষ তিন দলই বাজে একটি সপ্তাহ কাটিয়ে আবারো জয়ের ধারায় ফিরেছে। রিয়াল বেটিসের সাথে ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ, এ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের কাছে এ্যাথলেটিকো ও গ্রানাডার কাছে হেরেছে বার্সেলোনা। যে কারনে নিজেদের লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনতে এ সপ্তাহে তিন দলের সামনেই কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছিল। পিকে বলেছেন, ‘এখন একটাই লক্ষ্য এ্যাথলেটিকোর বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া। আশা করছি সপ্তাহের শেষে আমরাই টেবিলের শীর্ষে থাকবো।’
টেবিলের মাঝামাঝিতে থাকা ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে নিজেদের আরো একবার প্রমান করতে বার্সেলোনা জানতো তাদের ট্রাম্প কার্ড মেসিকে আরো একবার জ্বলে উঠতে হবে। বরাবরের মত মেসিও নিজের দায়িত্বের বিন্দুমাত্র অবহেলা করেনি। জোড়া গোলে মৌসুমের নিজের গোলসংখ্য ২৮’এ উন্নীত করেছেন, রিয়ালের ফরাসি ইন-ফর্ম তারকা করিম বেনজেমার থেকে যা সাত গোল বেশী। তুলনামূলক ধীরে মৌসুম শুরু করার পর মেসির জন্য এটি চ্যালেঞ্জও ছিল। গত পাঁচ ম্যাচে তিনি সাত গোল করেছেন।
গ্রানাডার বিপক্ষে রেফারির সাথে অশোভন আচরণের দায়ে লাল কার্ড দেখা কোচ রোনাল্ড কোম্যান কাল ডাগ আউটে ছিলেন না। তার স্থানে সহকারী কোচ আলফ্রেড শুরেডার দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথমার্ধে বার্সেলোনাই বেশী সুযোগ তৈরী করেছে। কিন্তু ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষনভাগ সেগুলোকে সফল হতে দেয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে সোলারের পাস থেকে গঞ্জালো গুয়েডে ভ্যালেন্সিয়াকে এগিয়ে দিতে পারেননি। অব্যশ এতে বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানের কৃতিত্বই বেশী। তবে কর্ণার থেকে গাব্রিয়েলের হেড আর আটকাতে পারেননি টার স্টেগান। থিয়েরি কোরেইয়া ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ হাতছাড়া করেন। ভ্যালেন্সিয়ার আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠার সুযোগে ১২ মিনিটের মধ্যে বার্সা তিন গোল করে বসে। ফ্রেংকি ডি জংয়ের একটি প্রচেষ্টা ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডি বক্সের ভিতর হ্যান্ডবল করে বসে টনি লাটো। প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে গোলরক্ষক জাসপার সিলিসেনকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন মেসি। কিন্তু সার্জিও বাসকুয়েট দারুনভাবে বলটি নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখেন। সেখানে থেকেই জটলার মধ্য থেকে মেসি গোল করে ৫৭ মিনিটে সমতা ফেরান। ছয় মিনিট পর জোর্ডি আলবার ফ্লোটেড ক্রস থেকে দারুন এক হেডে গ্রীজম্যান বার্সাকে এগিয়ে দেন। ৬৯ মিনিটে ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিকে মেসি দলের জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে ৩০ গজ দুর থেকে সোলারের শক্তিশালী শট ভ্যালেন্সিয়াকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনলেও শেষ পর্যন্ত তা সান্তনাই রয়ে গেছে।