বাসস দেশ-৫ : ভোলায় দীর্ঘদিন পর জমে উঠেছে মাছঘাটগুলো

107

বাসস দেশ-৫
ভোলা-মাছ-ঘাট-জমজমাট
ভোলায় দীর্ঘদিন পর জমে উঠেছে মাছঘাটগুলো
ভোলা, ১ মে, ২০২১ (বাসস) : দীর্ঘ ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে পুনরায় জমজমাট হয়ে উঠেছে জেলার বিভিন্ন মাছঘাট, বাজার ও মৎস্য আড়ৎগুলো। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় অভায়শ্রমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাসে সব ধরনের মৎস্য শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ৩০ এপ্রিল রাত ১২টার পর শেষ হলে জেলেরাও নদীতে নেমে পড়ে নতুন উদ্যোমে। লম্বা বিরতির পর জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ায় সরগরম হয়ে উঠেছে মাছের আড়ৎগুলো। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে জেলে পাড়ায়। জেলে ও ব্যাপারীদের হাঁক-ডাকে মুখরিত হচ্ছে মাছের ঘাটগুলো।
সরেজমিনে সদর উপজেলার ভোলার খাল মাছের ঘাট, নাছির মাঝি মাছঘাট, কোরার হাট মাছের মোকাম, তুলাতুলি মাছ ঘাট, বিশ্বরোড মাছের ঘাট, জংশন এলাকার মাছঘাট, ইলিশার মাছ ঘাটসহ বিভিন্ন মাছের মোকাম ঘুরে দেখা যায়, মৎস্য ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মত। কেউ বরফ তৈরী করছেন, কেউ ঝুঁড়ি প্রস্তুত করছেন, কেউবা গদিতে মাছ তুলে দাম হাকাচ্ছেন। সারারাত নদীতে মাছ ধরে সকাল বেলা ঘাটগুলোতে চকচকে রুপালী ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ নিয়ে আসে জেলেরা। আর মাছ আসলেই হাঁক-ডাক দিতে থাকে ব্যাপারীরা।
সদর উপজেলার ভোলার খাল মাছঘাটের আড়ৎদার মো: নিজামউদ্দিন বাসস’কে বলেন, তাদের এ ঘাটে ১৬টি মাছের আড়ৎ রয়েছে। এসব আড়ৎ’র শ্রমিক ও মালিকরা গত ২ মাস অলস সময় পার করার পর আজ সকাল থেকে ফের ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। সকালে প্রায় ২’শ নৌকা মাছ নিয়ে ঘাটে আসে। তবে পোয়া, টেংরা, ছুররা, চুলের ডাটি, বাটাসহ মিশ্র মাছ ধরা পরলেও ইলিশ কম আসছে বলে জানান তিনি।
অপর ব্যবসয়ী মো: আল-আমিন বলেন, সরকারের ইলিশ সংরক্ষণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গত বছর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। এবছরও ডিমওয়ালা মাছসহ জাটকা রক্ষা কার্যক্রম’র ফলে ব্যাপক ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে আরো ২/৩ মাস অপেক্ষা করতে হবে তার জন্য।
শীবপুর এলাকার জেলে রফিক মিয়া, আব্দুল খালেক, ছালাম কাজী বলেন, তারা রাত ১২ টার পর থেকেই নদীতে মাছ শিকারে নামেন। দীর্ঘদিন নদীতে কোন জাল না থাকায় মাছের ঘনত্ব ভালো ছিলো। তাদের জালে প্রচুর পোয়া, ছুররাসহ বিভিন্ন মিশ্র মাছ ধরা পড়েছে। তবে ইলিশ মাছের আমদানী কম রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজাহারুল ইসলাম বলেন, জেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার অভায়শ্রমে ২ মাস কঠোরভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা পালন করা হয়েছে। অধিকাংশ জেলেরা অনেক কষ্ট শিকার করে এ অবরোধ বাস্তবায়ন করেছে। তাদের এ ত্যাগের বিনিময়ে জেলায় ইলিশসহ অন্যনান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
এদিকে টানা দুই মাস নদীর মাছের আকাল কাটিয়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছে ভরপুর রয়েছে। সকাল থেকেই বিভিন্ন নদ-নদীর মাছের আমদানি বাড়ছে বাজারে। এতে করে স্বস্তি ফিরে এসেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। বিক্রেতারা ইলিশসহ বিভিন্ন মিশ্র মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছে বিক্রির জন্য। তাই ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষা-কষিতে মুখরিত স্থানীয় হাট-বাজারগুলো।
বাসস/এনডি/এইচ এ এম/১২১৫/নূসী