বিসিক শিল্পনগরীসমূহে মেডিকেল অক্সিজেন, ঔষধ ও নিত্যপণ্য উৎপাদন অব্যাহত

591

ঢাকা, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরীসমূহে
মেডিকেল অক্সিজেন, জীবনরক্ষাকারী ঔষধ, করোনা প্রতিরোধমূলক সামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবজনিত পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে বিসিকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়।
বিসিক শিল্পনগরী ও সমন্বয় শাখার তথ্যমতে সারাদেশে বিসিক’র ৭৬টি শিল্পনগরী রয়েছে। এ শিল্পনগরীগুলোর মধ্যে টাঙ্গাইলের তারটিয়ায় অবস্থিত বিসিক শিল্পনগরীর শিল্প প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস লিমিটেড করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন করছে। এ শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদনকারী চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম। কারখানাটিতে প্রতিদিন ১০ হাজার ঘনফুট মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদিত হয় যা টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, গাজীপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
এছাড়াও বিসিক শিল্পনগরীগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা প্রতিরোধমূলক পণ্য, পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান ডিটারজেন্ট পাউডার ও ফ্লোর ক্লিনার, জীবনরক্ষাকারী ঔষধ, হারবাল, ইউনানী ও এনিম্যাল ড্রাগস, শিশুখাদ্য ও গুড়া দুধ, চাল, ডাল, আটা, ময়দা, সুজি, সরিষার তেল, লবণ, পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, চানাচুর, চিড়া, মুড়ি, গো-খাদ্য, পোল্ট্রি ফিডস, ফিস ফিডস, ফিসিংনেট, সেন্টিফিউগাল পাম্প, কৃষিযন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, কীটনাশক, গুটি ইউরিয়া, দস্তাসার, তৈরি পোশাক, ড্রাইংকেমিক্যাল, তুলা উৎপাদন, ইলেকট্রিক ফ্যান, বাল্ব, প্লাস্টিকজাত পণ্য, এ্যালুমিনিয়ামতৈজসপত্রসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিসিক শিল্পনগরীসমূহে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ইতোমধ্যে প্রতিটি জেলায় মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিসিক জেলা কার্যালয় ও শিল্পনগরীসমূহের কর্মকর্তা এবং শিল্প মালিক সমিতির প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং টিম উৎপাদনরত শিল্পকারখানাগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করছেন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।
সারাদেশে বিসিকের ৭৬ টি শিল্পনগরীতে উৎপাদনরত শিল্প ইউনিট রয়েছে ৪ হাজার ৫৭০ টি এবং এসব শিল্প ইউনিটে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৬৩ হাজার ৩১৮ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে রপ্তানীমুখী শিল্প ইউনিট সংখ্যা ৯০১টি। বিসিক শিল্পনগরীসমূহে উৎপাদিত পণ্যের বাৎসরিক বাজার মূল্য প্রায় ২ লাখ ১৭ হাজার ২৬২ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা এবং রপ্তানীমুখী পণ্যের বাৎসরিক বাজার মূল্য প্রায় ৩২ হাজার ৫৯৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ।
বিসিক শিল্পনগরীসমূহে প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯৭ জন নর-নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে।
২০১৯-২০ অর্থ বছর বিসিক শিল্পনগরীসমূহ হতে ভ্যাট ও ট্যাক্সবাবদ বাংলাদেশ সরকার প্রায় ১৩ হাজার ৩৬৯ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা সরকার আয় করেছে।
বিসিক দেশে অনুকরণযোগ্য শিল্পোদ্যোক্তা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিসিক শিল্পনগরীতে শিল্প স্থাপন করে যেসব শিল্প ক্ষুদ্র শিল্প থেকে বৃহৎ শিল্পে পরিণত হয়েছে তার মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রাণ-আরএফ এল, বিআরবি ক্যাবলস, হ্যামকো ব্যাটারিজ, নিট/তৈরি পোশাক শিল্প, স্পিনিং শিল্প, ফকির অ্যাপারেল, ওয়েল ফ্যাশন, ন্যাশনাল ফ্যান ইন্ড্রাস্ট্রিজ, রাজশাহী সিল্ক, ফরচুন সুজ, আলীম অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্লোব ইন্ডাস্ট্রিজ, ওয়ান ফার্মা, জেনিথ ফার্মা, কিয়াম মেটাল, ফুলকলি, বনফুল লাভ ক্যান্ডি, মেরিডিয়ান চিপস, বেঙ্গল বিস্কুট অন্যতম।