জয়পুরহাটের মাঠ ঘাঠ বোরো ধানের শীষে ঝলমল করছে

486

জয়পুরহাট, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : জেলার মাঠ ঘাট এখন বোরো ধানের শীষে ঝলমল করছে। সোনালী বর্ণ ধারন করা এ ধান কৃষকের ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে এবং করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকলেও ধান কাটতে শ্রমিকের কোন সমস্যা হবে না এমন আশা কৃষি বিভাগের। জেলায় এবারও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, খাদ্যে উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটে চলতি ২০২০-২০২১ রবি ফসল উৎপাদন মৌসুমে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলায় এবার ৬৯ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছে ৬৮ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ মে.টন। বোরো চাষে সেচ সুবিধা প্রদানের জন্য ১ হাজার ৯৫৫ টি গভীর ও ৮ হাজার ৫৯৮টি অগভীর নলকূপ চালু করা হয়। বিএডিসি (বীজ) কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা করে। উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে বিআর-২৮, ২৯, ১৬ ও ৫৪ জাতের ধান। হাইব্রিড জাতের মধ্যে রয়েছে এসিআই- ১, ২, ৩, ৪, ৫, ধানীগোল্ড, হিরা-২, ৫, জাগরন, ময়না, টিয়া, ধানী, এসএল-৮, তেজ। সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়ন, জামালপুর ইউনিয়ন, পুরানাপৈল ইউনিয়ন, ধলাহার ইউনিয়ন, বম্বু ইউনিয়ন, আমদই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে বোরো ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারন করেছে। ফলন ভালো হওয়ায় ধানের শীষ গুলো হেলে পড়েছে জমিতে। কোমরগ্রাম এলাকার কৃষক শফিকুল ইসলাম, শ্যামপুর এলাকার কৃষক সুশীল চন্দ্র মন্ডল জানান, এবার ধানের ফলন খুব ভালে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার জয়পুরহাটের কৃষকদের ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যবহারের জন্য ১৮ টি কম্বাইন্ড হারভেষ্টার বরাদ্দ প্রদান করেছে। এরমধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদরে ৫ টি ও কালাই উপজেলায় ৫ টি , ক্ষেতলালে ৩ টি, আক্কেলপুর উপজেলায় ২ টি ও পাঁচবিবি উপজেলায় ৩টি। খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটের বোরো ধান যাতে ঘরে তুলতে কৃষকের কোন সমস্যা না হয় সে জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় আরও ৪ টি কম্বাইন্ড হারভেষ্টার চাওয়া হয়েছে বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ স. ম মেফতাহুল বারি। কম্বাইন্ড হারভেষ্টার গুলোর মোট মূল্যের অর্ধেক দাম দিবে কৃষক এবং বাকী অর্ধেক ভূর্তকি হিসেবে দিবে সরকার। জেলায় ধান কাটার জন্য পাশবর্তী জেলা গাইবান্ধা, রংপুর , কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগোযোগ করা হচ্ছে ফলে শ্রমিকের সমস্যা হবেনা উল্লেখ করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ স ম মেফতাহুল বারি জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২০১৯-২০২০ মৌসুমে জেলায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। এতে চালের উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩৩৫ মে. টন । যা জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন হয়েছিল ৪ দশমিক ৬৩ মে.টন চাল।