সিলেটে আরও ২শ’ শয্যার করোনা ইউনিট, ১৮ আইসিইউ শয্যা

205

সিলেট, ২৬ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ৮টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রসহ (আইসিইউ) খোলা হয়েছে ২শ’ শয্যার করোনা ইউনিট। আরও ১০টি আইসিইউ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বাসস’কে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে হাসপাতালের ১৮টি আইসিইউ শয্যা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় খোলা হচ্ছে।
২০২০ সালে সিলেটে করোনা সংক্রমণ বাড়ার পর থেকে নগরের চৌহাট্টাস্থ ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালকে আইসোলেশন কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়। এই হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। পাশাপাশি তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শামসুদ্দিন হাসপাতাল ছাড়াও শহরতলীর খাদিমপাড়ায় স্থাপিত শাহপরান ৩১ শয্যার হাসপাতাল ও দক্ষিণ সুরমায় ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ইউনিট খোলা হয়। তবে এই দুই হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট নেই।
গত কয়েকদিন ধরে আবারও সংক্রমণ বাড়ার কারণে শামসুদ্দিন হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ে। আইসিইউ ইউনিটের সবগুলো শয্যা পূর্ণ থাকায় রোগীদের সেবা বিঘিœত হতে থাকে। এর প্রেক্ষিতে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ২শ’ শয্যার করোনা আইসোলেশন ইউনিট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, ‘গত বছর করোনা সংক্রমণ বাড়ার পর ওসমানীতে করোনা রোগীদের জন্য পৃথক ইউনিট করা হয়। পরে সংক্রমণ কমে গেলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি করোনা শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় শামসুদ্দিন করোনা আইসোলেশন সেন্টারে রোগীর চাপ বেড়ে যায়। তাই ফের হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি ৮টি আইসিইউ বেড রাখা হয়েছে।’
তিনি জানান, বর্তমানে আইসিইউ বেডে ৫ জন করোনা রোগী ভর্তি আছেন। পাশাপাশি সন্দেহভাজন ৪০ জন করোনায় আক্রান্ত ৮ জন করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আরও ১০টি আইসিইউ বেড যোগ করা হচ্ছে যাতে সিলেটের কোন রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা না যায়।
এদিকে, ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ৮৪টি সাধারণ বেড ও ১৬টি আইসিইউ বেড রয়েছে। ১৬ আইসিইউ বেডের মধ্যে ১৪টিতে রোগী ভর্তি করা হয়, আর দুই বেড ডায়ালাইসিস এর জন্য ফাঁকা রাখা হয়। বর্তমানে সবকটি আইসিইউ বেডে করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. সুশান্ত মহাপাত্র।
সিলেটে আরও তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা ইউনিট রয়েছে। তিন হাসপাতালেই আছে আইসিইউ সুবিধা। সেখানে মোট ২৯টি আইসিইউ বেড রয়েছে। তবে এসব হাসপাতালেও আইসিইউ বেড ফাঁকা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেটে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন। ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসক ডা. মঈন উদ্দিন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১৫ এপ্রিল। এরপর থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত (২৫ এপ্রিল) সিলেট জেলায় ২৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগের চারজেলায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩২ জন। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে।