বাসস দেশ-৩৫ : করোনা মোকাবেলায় ৫৭৪ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

112

বাসস দেশ-৩৫
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী-ত্রাণ কার্যক্রম
করোনা মোকাবেলায় ৫৭৪ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস): দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের লকডাউনের জন্য সরকার কর্মহীন মানুষের মানবিক সহায়তায় প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ পরিবার উপকৃত হবে।
ডা. এনামুর রহমান আজ রাজধানীর সচিবালয়ে সার্বিক ত্রাণ বরাদ্দ ও বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের অভিঘাত মোকাবেলায় দেশে চলাচল সীমিতকরণের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য সরকার গত বছর বিপুল পরিমাণ খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরণের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছিল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এ বছরও করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে কর্মহীন মানুষের মানবিক সহায়তায় এ পর্যন্ত ৫৭৪ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনে শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য আরো টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়া এই টাকা দিয়ে শিশু খাদ্য ক্রয় করে তা বিতরণ করা হবে। এতে প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ পরিবার উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, ‘জিআর ক্যাশ দিয়েছি ১২১ কোটি টাকা, ভিজিএফ দিয়েছি ৪৭২ কোটি টাকা। আর বড় সিটি কর্পোরেশনগুলোকে ৫৭ লাখ ও ছোট সিটি কর্পোরেশনগুলোকে ৩২ লাখ টাকা দিয়েছি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোকেও টাকা দেওয়া হয়েছে।’
ডা. এনামুর রহমান বলেন, এছাড়াও করোনা ভাইরাসসহ যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে সব সময় অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়। ‘এ’ ক্যাটাগরি জেলার জন্য ৩ লাখ টাকা, ‘বি’ ক্যাটাগরি জেলার জন্য আড়াই লাখ ও ‘সি’ ক্যাটাগরি জেলার জন্য ২ লাখ টাকা করে সব সময় বরাদ্দ রাখা হয়। যা জেলা প্রশাসকরা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যয় করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতি-সম্প্রতি কর্মহীন মানুষকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রায় ৩৫ লাখ পরিবারকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করা হবে।
ডা. এনামুর আরো বলেন, এছাড়াও হিটশকে ক্ষতিগ্রস্থ এক লাখ কৃষক পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের জন্য সাড়ে সাত কোটি টাকা মূল্যের প্যাকেটজাত খাবার ক্রয় করা হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, নুডুলস ও চিড়াসহ বিভিন্ন আইটেম রয়েছে।
তিনি বলেন, দশ কেজি চালসহ প্রতিটি প্যাকেটের মধ্যে প্রায় ১৭ কেজি ওজনের খাদ্য সামগ্রী থাকবে। যা দিয়ে একটি পরিবারের প্রায় এক সপ্তাহ চলবে। আরো ১০ কোটি টাকার খাদ্য সামগ্রী কেনা হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের জন্য খুব শ্রীঘ্রই ৪০ কোটি টাকার ঢেউ টিন কেনা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, টিআর, কাবিখা খাতে তৃতীয় কিস্তিতে ৯৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর বাস্তবায়ন কাজ চলমান থাকায় কর্মহীন মানুষ এই কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করতে পারবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে দেশের ৬৪ টি জেলার জন্য ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটা পর্যাপ্ত কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অবশ্যই পর্যাপ্ত নয়। কারণ যে সংখ্যক মানুষ কর্মহীন রয়েছে, তাকে সেখানে এই ৫০ থেকে ৫৭ লাখ টাকা কোন টাকাই না।
মেয়রা বলেছেন, ৫০ লাখ টাকা না দিয়ে যদি ৫ কোটি টাকা দেন তাও এখানে কুলাবে না। আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নগরের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে বলেছেন, নগরে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেশি। আমরা প্রস্তুত আছি, এটা বিতরণ করুন। আবার চাহিদা পাঠান, আমরা বরাদ্দ দেব।”
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমদানী, লোকাল ক্রয় এবং বোরো উৎপাদন মিলিয়ে আমরা মজুতের ক্ষেত্রে স্বস্তিকর অবস্থায় আছি। আমাদের খাদ্য সংকট হবে না। আমাদের সরকারের সামর্থ্য আছে, যতদিন প্রয়োজন আমরা এই মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।”
বাসস/সবি/এমএএস/১৭৪০/-কেএটি