বাসস দেশ-১৫ : আখাউড়ায় বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ, ক্যাপসিকাম ও সিমলা চাষ হচ্ছে

103

বাসস দেশ-১৫
তরমুজ চাষ
আখাউড়ায় বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ, ক্যাপসিকাম ও সিমলা চাষ হচ্ছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৫ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : জেলার আখাউড়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়েছে তরমুজ, ক্যামসিয়াকাম, সিমলা। উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে দেশীয় পদ্ধতিতে প্রায় ২৬বিঘা জমিতে ওই সব ফল চাষ করে বাজিমাত করেছেন ধাতুর পহেলা গ্রামের কৃষক মো. মুস্তাকিম। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এসব ফল বিক্রি করে যাবতীয় খরচ বাদে কয়েক লাখ টাকার আয় হবে বলে আশা করছেন মোস্তকিম। নানা রঙ্গের দৃষ্টিকাড়া এসব ফল দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ভিড় করছেন ক্ষেতে।
আদমপুর গ্রামে কৃষক মোস্তাকিমের কৃষি প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, অনেক এলাকা জুড়ে রয়েছে তরমুজ। যে দিকে দৃষ্টি যায় তরমুজ আর তরমুজ। লাল-সবুজ আর হলুদ রঙের কাঁচা-পাকা ক্যাপসিকাম আর সিমলা। জমিতে প্রতিটি গাছে গাছে ঝুলছে লাল, হলুদ আর সবুজ রঙের ক্যাপসিকাম আর সিমলা। ক্যাপসিকাম আর সিমলার বাম্পার ফলন হয়েছে।
একদিকে গাছের পরিচর্যা অন্যদিকে তরমুজ কাটা শুরু হওয়ায় সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকেরা। এরই মধ্যে তরমুজ বিক্রি শুরু হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় বেজায় খুশি কৃষক।
কৃষক মো. মোস্তাকিম জানান, ২৬ বিঘা জমি বার্ষিক চুক্তিতে ইজারা নিয়েছেন। সেখানে মায়ের দোয়া বহুমুখী কৃষি প্রকল্প নামে একটি খামার গড়ে তুলেন। ওই প্রকল্পে ১২ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছেন। বাকি জমিতে ক্যাপসিকাম, সিমলা, টমোটো, কাঁচা মরিচ ও শশা চাষ করেছেন। তার খামারে প্রতিদিন ১০জন শ্রমিক কাজ করে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশীয় পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম ও সিমলার চাষ করেছেন। সেচ, বীজ, চারা রোপণ, জমি ইজারা, পরিচর্যা, সারসহ অন্যান্য খরচ হয় প্রায় ৯০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে দেড় লাখ টাকার সিমলা ও ক্যাপসিকাম বিক্রি করা হয়েছে। ক্ষেতে এখনো ১ লাখ টাকার ওপর সিমলা ও ক্যাপসিকাম রয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যাবতীয় খরচ বাদে দেড় লাখ টাকার বেশি আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে প্রতি কেজি লাল, সবুজ ও হলুদ রঙের সিমলা ও ক্যাপসিকাম ১৩০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউন থাকায় ১শ’ টাকার নিচে বিক্রি করতে হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে নতুন জাতীয় ক্যাপসিকাম ও সিমলা অনেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
এ উদ্যোক্তা আরো বলেন, ক্যাপসিকামের বীজ বপন করার এক মাস পর চারা তৈরি হয়। চারা উপযুক্ত হওয়ার পর জমি তৈরি করতে হয়। চারা রোপণের আগে পলিথিন দিয়ে বেড তৈরি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে গাছের চারা বপন করতে হয়। বীজ বপনের পর গাছগুলো নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। গাছ লাগানোর ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল আসার ২৫ দিনের মধ্যে ফল বিক্রির উপযুক্ত হয়।
উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক বলেন, তরমুজ, ক্যাপসিকাম ও সিমলা চাষ করে সত্যিই অবাক করে দিয়েছে কৃষক মোস্তাকিম। তার সফলতায় আমরা মুগ্ধ। নতুন ফসল চাষ করার জন্য আমরা কৃষকদের সব সময় উদ্বুদ্ধ করি।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১৩৪৫/নূসী