বাসস দেশ-৩৮ : ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে উগ্রবাদ ছড়াতে সংগঠন তৈরি করেছে হেফাজত: ডিবি যুগ্ম কমিশনার মাহবুব

133

বাসস দেশ-৩৮
ডিবি-ব্রিফিং
ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে উগ্রবাদ ছড়াতে সংগঠন তৈরি করেছে হেফাজত: ডিবি যুগ্ম কমিশনার মাহবুব
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস): ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে সারাদেশে উগ্রবাদ ছড়াতে সংগঠন তৈরি করেছে হেফাজতে ইসলাম।
ওয়াজ মাহফিল নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন’ নামক একটি সংগঠনও তৈরি করেছে হেফাজত।নিজেদের নেতাকর্মীদের নিয়ে গড়া সিন্ডিকেট সংগঠনটি নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মাধ্যমে তারা উগ্রবাদী চিন্তাধারা, বক্তব্য প্রচার ও বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করছে ।
হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে আজ বাসস’র সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. মাহবুব আলম।
তিনি বলেন, ‘হেফাজত নেতাদের বিভিন্ন ওয়াজে নেওয়ার জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আয়োজকদের বাধ্য করা হচ্ছে । এর মাধ্যমে তাঁরা উগ্রবাদী চিন্তাধারা, বক্তব্য প্রচার ও বাস্তবায়ন করতে পারছে।’ তা ছাড়া মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে অনেক হেফাজত নেতা বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। মাদ্রাসা দখলের মতো অপকর্ম ও অনেকে নারী ঘটিত অনৈতিক ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নাশকতার অভিযোগে ঢাকাসহ সারাদেশে বেশকিছু মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১২টি মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া ২০১৩ সালে হেফাজতের শাপলা চত্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা নাশকতার ঘটনায় মোট ৫৩টি মামলা দায়ের হয়। মোট ৬৫টি মামলা তদন্তাধীন আছে। এ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের ১৪ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। তারা আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন।’
মাহবুব আলম বলেন, ‘তিনটি টিম গঠন করে দিয়েছি। যাদের কোরআন হাদিসের জ্ঞান আছে, তাদের টিমে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। আমরা স¤প্রতি ও ২০১৩ সালে দায়ের করা মামলা তদন্ত করছি। এর অধিকাংশগুলোই নাশকতার মামলা। নাশকতার ঘটনাগুলোর তদন্ত করছি ।’
তিনি বলেন,‘২০১৩ সালে সরকার পতনের লক্ষ্যে একটি চক্রান্ত হয়। চক্রান্তের মধ্যে জড়িত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। নাশকতার উদ্দেশ্য ছিল সরকার পতনের।সেখানে হেফাজতকে কাজে লাগিয়ে সরকার পতনের অপচেষ্টা চালিয়েছিল।’
ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতে ইসলাম এমন একটি সংগঠন যারা সব মাদরাসা ছাত্রকে ডাকতে পারে এবং তাদের ডাকে সাড়া দেয়। এই সুযোগ নিয়েই হেফাজতকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালে ১৬৪ ধারায় বাবুনগরী জবানবন্দী দিয়েছিলেন। স¤প্রতি মুফতি ফখরুলের জবানবন্দিতে সেই ধরনের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সেখানে কিছু বিষয় পরিষ্কার হয়েছে, হেফাজত এখন অনেকের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অপচেষ্টা ও নাশকতা করছে।’
হেফাজত নেতারা আসলে কী চান- জবাবে মাহবুব আলম বলেন, ‘তাদের আসলে সরকার পতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তান মডেলে বানানোর পরিকল্পনা আছে। আমরা তদন্তে উগ্রবাদী নেতাদের নাম জানার চেষ্টা করছি। উগ্রবাদের মাধ্যমে যারা নাশকতার চেষ্টা করছে সেই ধরনের ভিডিও ফুটেজ, অডিও ও জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যগুলো সমন্বয়ের চেষ্টা করছি।
কোন রাজনৈতিক দল ষড়যন্ত্রে জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসলামপন্থীর বাইরেও মূলধারার রাজনৈতিক দল আছে।
হেফাজতের অর্থের জোগানদাতা কারা- এ বিষয়ে মাহবুব আলম বলেন, তারা বলেছেন বাইরে থেকেই বেশির ভাগ অর্থ আসে।
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের গোপন বিয়ের বিষয়ে মাহবুব আলম বলেন, ‘প্রথম বিয়ে শরিয়তসম্মতভাবে হয়েছে। পরবর্তী দুটি বিয়ের কথা তিনি স্বীকার করেছেন যা ছিল চুক্তিভিত্তিক। কাবিননামা ছাড়া পরের দুই বিয়েতে স্ত্রী থাকবে তবে মর্যাদা পাবে না। আবার স্ত্রীর মতো চলতে পারবে, এমন চুক্তি হয়। যদিও চুক্তিতে সম্পর্কের অধিকার ও সন্তান ধারণ করতে না পারার কথাও বলা হয়েছে যা প্রচলিত আইনের পরিপন্থি।’
বাসস/এএসজি/এমএমবি/২০৩৫/-কেকে