বাসস দেশ-১৩ : চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা ৪৮ হাজার ছাড়ালো

80

বাসস দেশ-১৩
চট্টগ্রাম-কোভিড-বাড়ছে
চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা ৪৮ হাজার ছাড়ালো
চট্টগ্রাম, ২২ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা ৪৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২৭৮ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হলে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৮ হাজার ১৩৯ জনে। এ সময়ে করোনায় ৩ রোগীর মৃত্যু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ল্যাবে গতকাল বুধবার ১ হাজার ৭৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ২৭৮ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ১৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২২৩ জন ও ১২ উপজেলার ৫৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে পটিয়ায় সর্বোচ্চ ১৩ জন, সীতাকু- ও হাটহাজারীতে ৯ জন করে, চন্দনাইশে ৭ জন, সাতাকানিয়ায় ৫ জন, মিরসরাইয়ে ৩ জন, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী ও লোহাগাড়ায় ২ জন করে এবং রাউজান, ফটিকছড়ি ও বাঁশখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৪৮ হাজার ১৩৯ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৮ হাজার ৬৪৭ জন ও গ্রামের ৯ হাজার ৪৯২ জন।
গতকাল করোনায় ৩ রোগীর মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৪৮০ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৩৫৮ জন ও গ্রামের ১২২ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৭৬ জন। জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৬১৬ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৮৮১ জন এবং বাসা থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩০ হাজার ৭৩৫ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৪০ জন ও ছাড়পত্র নেন ৪০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪০৪ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গতকালের ৩ জনসহ চলতি মাসের ২১ দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৯১ জনে। করোনাকালের সর্বোচ্চ ৯ রোগীর মৃত্যু হয় চলতি এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে। তবে এদিন এ মাসের সর্বনি¤œ ২২৮ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। জেলার সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্তও শনাক্ত হয় ১১ এপ্রিল। এদিন ৭ রোগীর মৃত্যু হয়।
এছাড়া, এবার করোনা রোগীর সংখ্যা তিনদিনে এক হাজার পূর্ণ হয়। গত ১৮ এপ্রিল ৪৭ হাজার অতিক্রম করে চার দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে। এদিন ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় নতুন ২৯৩ জনের দেহে। সংক্রমণের হার ২৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। করোনায় আক্রান্ত ৫ রোগীরও মৃত্যু হয়। এর আগে, দুই দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে মোট আক্রান্ত ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৪ এপ্রিল। তিন দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে ১২ এপ্রিল জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ২৯১ জনে। এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার অতিক্রম করেছিল ৯ এপ্রিল। এদিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ সময়ে মারা যান ৫ করোনা রোগী। সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ সময়ে পরপর পাঁচবার তিনদিনে করোনা রোগীর হাজারপূর্তি হয়। ৪৩ হাজার পার হয় ৭ এপ্রিল ও ৪২ হাজার অতিক্রম করে ৫ এপ্রিল। ২ এপ্রিল ৪০ থেকে ৪১ হাজারে যেতেও সময় লাগে ৩ দিন। ফলে সর্বশেষ পাঁচবার দ্রুততম সময়ে এক হাজার পূর্ণ হলো। অথচ, ৪০ হাজার পূর্ণ হয়েছিল ৩১ মার্চ। ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছিল ২৬ মার্চ। এর আগে ৩৮ হাজার পূর্ণ হয় ২২ মাচ। ৩৭ হাজার পূর্ণ হয় ১৭ মার্চ। ৩৬ হাজার পূর্ণ হয় ১০ মার্চ। এর আগে ১ মার্চ ৩৫ হাজার পূর্ণ হয়। সে সময় এক হাজার পূর্ণ হতে ১৪ দিন লেগেছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার অতিক্রম করার সময় ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ে হাজার পূর্ণ হওয়ার কাল।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৫৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ২০ জনসহ ৬২ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২৭১ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ১ জনসহ ১২ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ৬ জনসহ ৩২ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৬৩টি নমুনার মধ্যে শহরের ৩১টি ও গ্রামের ২০টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৪১টি নমুনায় গ্রামের ১টিসহ ২১টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ২৫৩ নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৪টিসহ ৪২টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৩৯টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ২টিসহ ৪১টি এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৫টি নমুনায় গ্রামের ১টিসহ ১৭টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক গতকালের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, চমেকে ৪ দশমিক ৪৩, চবি’তে ২২ দশমিক ০৭, সিভাসু’তে ১৯ দশমিক ৩৯, আরটিআরএলে ৫১ দশমিক ২২ শতাংশ, শেভরনে ১৬ দশমিক ৬০, ইম্পেরিয়ালে ২৯ দশমিক ৪৯ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।
বাসস/জিই/কেএস/১৪১০/-আসাচৌ