বাসস দেশ-৮ : সাতক্ষীরায় ১০ মাসে ৮৬ বাল্যবিয়ে বন্ধ

102

বাসস দেশ-৮
বাল্য বিয়ে-বন্ধ
সাতক্ষীরায় ১০ মাসে ৮৬ বাল্যবিয়ে বন্ধ
সাতক্ষীরা, ২০ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে গত ১০ মাসে জেলার ৭ উপজেলায় ৮৬ বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একেএম শফিউল আযম জানান, সাতক্ষীরা জেলার ৭ উপজেলায় ২০২০ সালের জুলাই মাসে ১২টি, আগস্ট মাসে ৭ টি, সেপ্টেম্বর মাসে ১৪ টি, অক্টোবর মাসে ৭ টি, নভেম্বর মাসে ৮ টি, ডিসেম্বর মাসে ৫টি ও ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ৯টি,ফেব্রুয়ারি মাসে ১১টি, মার্চ মাসে ৮টি, চলতি মাসে ৫টিসহ মোট ৮৬ কিশোরীকে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা করেছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটি। এসব কিশোরীর বেশির ভাগ ৭ম থেকে ১০ম শ্রেণির বলে জানিয়েছেন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা।
তিনি আর ও জানান,এ লক্ষ্যে সরকার বাল্যবিয়ের ব্যাপারে জিরো-টলারেন্স নীতি নিয়েছে। জেলায় কোথাও বাল্যবিয়ে হলে ৯৯৯ বা ১০৯ নম্বরে ফোন দিলে বাল্যবিয়ে বন্ধে উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নেয়। তাছাড়া মহিলা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় স্কুল-মাদ্রসা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় বাল্যবিয়ে রোধে সচেতনতামূলক কাজ করছে।
বাল্যবিয়ে দূরীকরণে নানা উদ্যোগ নিয়ে তিনি আরও জানান, আমরা বাল্য বিয়ে দূর করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইমাম, কাজী, পুরোহিতদের প্রশিক্ষণ, জনপ্রতিনিধি ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক, সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৈঠক, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধী কনসার্টসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে প্রশাসন। আর শেষ পর্যায়ে বাল্য বিয়ে দিলে আইনের মাধ্যমে শাস্তি পেতে হবে বলে সতর্ক করেছি। যুব সংগঠনের শিক্ষার্থীদের কাছে আমার ব্যক্তিগত ফোন নাম্বারও দিয়ে রেখেছি। তারা যেকোনো সময় আমাকে ফোন দিতে পারবে। আর আমি ফোন পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
এ ব্যাপারে জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা জানান, কিশোরীদেরকে বাল্য বিয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে অভিভাবকরা। করোনার এ সময়ে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় বেশি বাল্য বিয়ে হয়েছে। এরপরের অবস্থানে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা। আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যেয়ে বিয়ে বন্ধ করে আসছি। কিন্তু পরবর্তীতে দেখছি তাদের অধিকাংশই শ্বশুর বাড়ি। এমন অবস্থা থেকে কিশোরী মেয়েদের রক্ষা করার একমাত্র পথ পারিবারিক সচেতনতা। সেজন্য সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে একযোগে বাল্য বিয়ে বন্ধে কাজ করতে হবে। তাহলে জেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত করতে পারবো আমরা।
বিষয়টি সম্পর্কে তালা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন নাহার জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ানের আটুলিয়া ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শারমিন নামের এক কিশোরীর সাথে আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের মোমিন জোয়াদ্দার (২৭) এর সাথে গোপনে বিয়ে হয়। অতঃপর কনের বাড়িতে অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে অত্র ওয়ার্ডের মেম্বার মনির আমাকে জানালে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে যেয়ে বিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। তাদের যে রেজিস্ট্রার বিয়ে পড়িয়েছে তিনি ভূয়া কাগজপত্রে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করেছে। আমরা ওই সময়ে মেয়েটিকে তার চাচার হেফাজতে দিয়েছি এবং ১৮ বছরের আগে শ্বশুর বাড়ি না দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলাম।
তিনি জানান, মেয়েটির শিশু বয়সের টিকার কার্ড ও প্রাইমারি স্কুলের সার্টিফিকেট অনুযায়ী বয়স ১৪ বছর এবং ভূয়া জন্মনিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী ১৮ বছর।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১২১৫/নূসী