বাসস দেশ-৪১ : বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষিত হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র রক্ষায় হবে নৌ থানা

144

বাসস দেশ-৪১
হালদা রক্ষায়-হবে নৌ থানা
বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষিত হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র রক্ষায় হবে নৌ থানা
চট্টগ্রাম, ১৮ এপ্রিল ২০২১ (বাসস) : মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষিত দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র রক্ষায় এবার ওই নদীকে কেন্দ্র করে একটি নৌ থানা স্থাপন করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে এরকম একটি প্রস্তাবনা পুলিশের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নৌ পুলিশের এসপি মোমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া। সেই থানা কোথায় হবে কেমন হবে তার বিস্তারিত জানতে সরেজিমন পরিদর্শনও করেছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম নৌ পুলিশের এসপি মোমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, এরআগে গত মার্চ মাসের শুরুতে হালদা নদীর গুরুত্বপূর্ণ আটটি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছিল সিসি ক্যামেরা। চলতি মাসে শুরু হচ্ছে প্রজনন মৌসুম। এ জন্যে অবৈধ জাল পেতে মা মাছ নিধন রোধ, ইঞ্জিন চালিত নৌকা চালাচল বন্ধ, বালু উত্তোলন বন্ধ ও ডলফিন রক্ষায় হালদা নদীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে এ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, আটটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন (পিটি জেড, ৩৬০ ডিগ্রী, ২ কিলোমিটার জুম) ক্যামেরার মাধ্যমে মদুনাঘাট থেকে আমতোয়া পর্যন্ত মনিটরিং করা হচ্ছে। এসব সিসি ক্যামেরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সম্মার্টফোন এবং একাধিক ডিভাইস দ্বারা মনিটরিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সদরঘাট নৌ থানার আওতায় হাটহাজারী উপজেলার রাম দাশ মুন্সির হাটে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী নৌ-পুলিশ ক্যাম্প। এবার হালদা নদী রক্ষায় পূর্ণাঙ্গ নৌ থানা স্থাপন করার কথা ভাবছে পুলিশ। তবে সেটি প্রাথমিকভাবে ‘রাউজান নৌ থানা’ নামে রাউজান উপজেলাতেই স্থাপন করা হবে। কোন জায়গায় স্থাপন করা গেলে সুবিধা হয় এবং কী পরিমাণ জনবল কাটামো প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে গত শনিবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন খান।
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, হালদা নদীর গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে আমরা এবার পূর্ণাঙ্গ একটি নৌ থানা স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখনও সব কিছু চুড়ান্ত হয়নি। থানা স্থাপনের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে প্রস্তাবকারী কমিটি রয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে সেটা মন্ত্রণালয়ে যায়। সেখান থেকে নানা ধাপ পেরিয়ে থানার চুড়ান্ত অনুমোদন পায়। বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ডিআইজি স্যার পরিদর্শন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ডলফিন হত্যা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। এরপর থেকে আমরা হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। চলতি মাসের যে কোনও সময়ে প্রাকৃতিক প্রজননের মাস শুরু হবে। মা-মাছের যাতে ক্ষতি না হয়, স্বাভাবিকভাবে ডিম ছাড়তে পারে সেটি নিশ্চিত করার জন্যে কাজ করছি।
গত বছর দেশের রুই জাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় ডিম সংগ্রহে গত ১৪ বছরের রেকর্ড ভাঙা হয়। গত এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে গেল বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক ডিম সংগ্রহ করেছিলেন সংগ্রহকারীরা। পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি। ২০২১ সালে হালদা নদীতে গাঙ্গেয় ডলফিনের মৃত্যু না হলেও ২০২০সাল পর্যন্ত ২৮টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে।
বাসস/জিই/কেএস/১৯০৬/কেকে