বাসস দেশ-১০ : চট্টগ্রামে করোনায় ৫ রোগীর মৃত্যু

92

বাসস দেশ-১০
চট্টগ্রাম-করোনা-মৃত্যু
চট্টগ্রামে করোনায় ৫ রোগীর মৃত্যু
চট্টগ্রাম, ১৩ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : করোনায় চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন ৪৩১ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এদিন জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ হাজার অতিক্রম করে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ২ হাজার ৬২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন ৪৩১ জন আক্রান্তের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৬২ জন ও বারো উপজেলার ৬৯ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ২৪ জন, পটিয়ায় ১১ জন, রাউজানে ১০ জন, ফটিকছড়ি, লোহাগাড়া ও বোয়ালখালীতে ৪ জন করে, মিরসরাই ও বাঁশখালীতে ৩ জন করে, সীতাকু- ও আনোয়ারায় ২ জন করে এবং রাঙ্গুনিয়া ও সন্দ্বীপে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৪৫ হাজার ২৯১ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে ৩৬ হাজার ৩৪৫ জন শহরের ও ৮ হাজার ৯৪৬ জন গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল করোনায় আরো ৫ জন মারা যান। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৪৩৫ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৩১৯ জন ও গ্রামের ১১৬ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৭১ জন। এতে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৯০১ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৭৫১ জন ও ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩০ হাজার ১৫০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন, ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩৫৪ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের ৫ জনসহ চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে ৪৬ জন মৃত্যুবরণ করেন। করোনাভাইরাসে জেলায় এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৯ জন মারা যান ১০ এপ্রিল। এ সময়ে ২২৮ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। করোনাকালের সর্বোচ্চ ৫৪১ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয় ১১ এপ্রিল। এদিন ৭ রোগীরও মৃত্যু হয়। সংক্রমণ হার ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এদিকে, এবারও মাত্র তিনদিনে করোনা রোগী এক হাজার পূর্ণ হয়। আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার অতিক্রম করেছিল ৯ এপ্রিল। এদিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ সময়ে মারা যান ৫ করোনা রোগী। সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ নিয়ে পরপর পাঁচবার তিনদিনে করোনা রোগীর হাজারপূর্ণ হলো। এর আগে ৪৩ হাজার পার হয় ৭ এপ্রিল ও ৪২ হাজার অতিক্রম করে ৫ এপ্রিল। ২ এপ্রিল ৪০ থেকে ৪১ হাজারে যেতেও সময় লাগে ৩ দিন। ফলে সর্বশেষ পাঁচবার দ্রুততম সময়ে এক হাজার পূর্ণ হলো। অথচ, ৪০ হাজার পূর্ণ হয়েছিল ৩১ মার্চ, পাঁচ দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে। ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছিল ২৬ মার্চ, তাও পাঁচ দিনে। এর আগে ৩৮ হাজার পূর্ণ হয় ২২ মার্চ, ছয় দিনে। ৩৭ হাজার পূর্ণ হয় ১৭ মার্চ, ৭ দিনে। ৩৬ হাজার পূর্ণ হয় ১০ মার্চ, ১০ দিন সময় নিয়ে। এর আগে ১ মার্চ ৩৫ হাজার পূর্ণ হয়। সে সময় এক হাজার পূর্ণ হতে ১৪ দিন লেগেছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার অতিক্রম করার সময় ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ে হাজার পূর্ণ হওয়ার কাল।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে। এখানে ৭৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩৮ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। এরা সকলেই শহরের বাসিন্দা। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৬৭৯ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ৬ জনসহ ৭২ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৩৭ জন ও গ্রামের ২৫ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৩১৩টি নমুনার গ্রামের ১৭টিসহ ৮৮টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ৮টি নমুনার মধ্যে ৬টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। এ ৬ জনই শহরের বাসিন্দা।
নগরীর তিন বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৪০২টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৯টিসহ ৭১টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২২৫টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৬টিসহ ৫৮টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৭৩টি নমুনায় গ্রামের ৪টিসহ ৩৪টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। এদিন চট্টগ্রামের ৪ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় দু’জনের ফলাফল পজিটিভ ও দু’জনের নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে চমেকে ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ১০ দশমিক ৬০, চবিতে ৩৬ দশমিক ৬৯, সিভাসু’তে ২৮ দশমিক ১১, আরটিআরএলে ৭৫ শতাংশ, শেভরনে ১৭ দশমিক ৬৬, ইম্পেরিয়ালে ২৫ দশমিক ৭৮, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৬ দশমিক ৫৭ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫০ শতাংশ সংক্রমণ হার পাওয়া যায়।
বাসস/জিই/কেএস/১২৪০/-আসাচৌ