বাসস দেশ-২৮ : আজ ৪ এপ্রিল বন্দর গণহত্যা দিবস ॥ নাটকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়ায় এ গনহত্যা চালানো হয়

89

বাসস দেশ-২৮
গনহত্যা দিবস
আজ ৪ এপ্রিল বন্দর গণহত্যা দিবস ॥ নাটকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়ায় এ গনহত্যা চালানো হয়
নারায়ণগঞ্জ, ৩ এপ্রিল ২০২১ (বাসস) : আজ ৪ এপ্রিল। বন্দর গনহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মাঠের পার্শ্ববর্তী এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষকে হত্যা করে পাকিস্থানী বাহিনী। এদের মধ্যে ৫৪ জনের পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়। তাদের লাশ মাঠের এক প্রান্তে জড়ো করে গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের কার্যকরী সদস্য নাট্যকর্মী শফিউল্লাহ মিয়া বাবু জানান, ২৫ মার্চ সন্ধায় সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মাঠে ‘অমর বাঙ্গালী’ নামের একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। যে নাটকের লেখক ছিলেন মরহুম আব্দুস সাত্তার ভূইয়া। নির্দেশনায় ছিলেন আমারা বাবা এস এম ফারুক। নাটকে পাকিস্তানী শোষনের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। এতে শেষ দৃশ্যে জয় বাংলা স্লোগান ছিলো। ৪ এপ্রিল তিনটা থেকে পাকিস্তানী বাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের পার্শ্ববর্তী মানুষজনকে ধরে আনে। ধরে আনার সময় এ নাটকে জয় বাংলা স্লোগান দেয়ার কথা অনেককে জিজ্ঞেস করা হয়। এছাড়া নাটকের অভিনেতা, কলাকুশলীদেরও বন্দরের বিভিন্নস্থান থেকে ধরে আনে। নাটক দেখতে কারা এসেছিলো রাজাকারদের সহায়তায় তাদেরকেও খোঁজা হয়। ৪ এপ্রিল সূর্য ওঠার পর সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের শেষ প্রান্তে ব্রাশ ফায়ার করে ধরে আনাদের হত্যা করা হয়। হত্যার পর আশেপাশের বেড়ার ও কাঠের বাড়িঘর ভেঙ্গে এনে লাশের উপরে দিয়ে গান পাউডার ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। বেশিরভাগ লাশ ভস্মিভূত হয়ে যায়। ফলে অনেক লাশ-ই চিহ্নিত করা যায়নি। মোট ৫৪ জনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছিলো।
নিহতদের হাড় সংরক্ষন করে রেখেছেন সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের পাশের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ই¯্রাফিল কাজি। তিনি এখানে একটি স্মৃতি যাদঘর করার দাবী জানান।
গনহত্যার স্মৃতি সংরক্ষনে এখানে একটি স্মৃতি সৌধ ও সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের পুরনো ভবন ভেঙ্গে তিনতলা ক্লাব কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নবনির্মিত নগর ভবনে একটি যাদুঘর করা হবে। সেখানে সিরাজউদ্দৌলা ক্লাবের গনহত্যায় নিহতদের হাড় সংরক্ষন করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
বাসস/সংবাদদাতা/১৯১৫/কেকে