বাসস দেশ-৬ : চট্টগ্রামে করোনায় দু’জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ২৮৭ জন

83

বাসস দেশ-৬
চট্টগ্রাম-করোনা
চট্টগ্রামে করোনায় দু’জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ২৮৭ জন
চট্টগ্রাম, ১ এপ্রিল, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ২ রোগীর মৃত্যু এবং ২৮৭ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার এ মাসের সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ সময়ে জেলায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গতকাল বুধবার নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেলে ১ হাজার ৯১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ২৮৭ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৬৭ জন এবং নয় উপজেলার ২০ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সীতাকু-ে ৪ জন, হাটহাজারী, লোহাগাড়া ও সাতাকানিয়ায় ৩ জন করে, পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়ায় ২ জন করে এবং মিরসরাই, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪০ হাজার ২৮৩ জনে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩২ হাজার ৬২ জন এবং গ্রামের ৮ হাজার ২২১ জন।
গতকাল চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত দুই জনের মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৩৮৮ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৮৪ জন ও গ্রামের ১০৪ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭৫ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৭৯ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৪ হাজার ৬০৫ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে ২৯ হাজার ৪৭৫ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ২৫ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ১৮৯ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের ২ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গত মাসে জেলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়। দুই জন করে মারা যান ১৩, ১৫ ও ৩১ মার্চ। গত ২৪ ঘণ্টার সংক্রমণ হার এ মাসের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ। এদিকে, এবারও এক হাজার পূর্ণ হতে সময় লাগে মাত্র পাঁচ দিন। ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছিল ২৬ মার্চ, তাও পাঁচ দিনে। সবচেয়ে কম সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার পূর্ণ হয় সেবারও। এর আগে ৩৮ হাজার পূর্ণ হয় ২২ মার্চ, ছয় দিনে। ৩৭ হাজার পূর্ণ হয় ১৭ মার্চ, ৭ দিনে। ৩৬ হাজার পূর্ণ হয় ১০ মার্চ, ১০ দিন সময় নিয়ে। এর আগে ১ মার্চ ৩৫ হাজার পূর্ণ হয়। সে সময় এক হাজার পূর্ণ হতে ১৪ দিন লেগেছিল। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার অতিক্রম করার সময় ১ হাজার পূর্ণ হয় ১৫ দিনে। ৩১ জানুয়ারি ১৬ দিনে ১ হাজার পূর্ণ হয়ে ৩৩ হাজার অতিক্রম করে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ে হাজার পূর্ণ হওয়ার কাল। অথচ তার আগে ৯ দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩২ হাজার অতিক্রম করে গত ১৫ জানুয়ারি। আট দিনে এক হাজার পূর্ণ হয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ৬ জানুয়ারি। এর আগে ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় মোট শনাক্ত রোগী ৩০ হাজার অতিক্রম করে। ২১ ডিসেম্বর মোট আক্রান্ত ২৯ হাজার অতিক্রম করে। জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৪ ডিসেম্বর।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৭৫৮ টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে গ্রামের ছয়টিসহ ৬৪ টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৬৩৮ জনের নমুনায় গ্রামের ৫ জনসহ ৮৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৫৫ জনের মধ্যে ১৭ জন আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৫২ টি নমুনা পরীক্ষা হলে গ্রামের ৩ টিসহ ৩৭ টিতে জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩৭৮ টি নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৫ টিসহ ৬৪ টি এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৩১ টি নমুনায় নগরীর ১৬ টিতে করোনাভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। এদিন চট্টগ্রামের ৩ টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় একটির পজিটিভ এবং দু’টির নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, চমেকে ১৩ দশমিক ৭৯, চবি’তে ৩০ দশমিক ৯১, আরটিআরএল-এ ৭১ দশমিক ১৫, শেভরনে ১৬ দশমিক ৯৩, মা ও শিশু হাসপাতালে ৫১ দশমিক ৬১ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।
বাসস/জিই/কেএস/১৩০০/-জেহক