চট্টগ্রামে নতুন ২৬৯ জন করোনায় আক্রান্ত

273

চট্টগ্রাম, ২৪ মার্চ ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে নতুন ২৬৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংক্রমণ হার ১১ দশমিক ২২ শতাংশ। তবে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ২ হাজার ৩৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ২৬৯ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৪৩ জন এবং ১১ উপজেলার ২৬ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৮ হাজার ২৯২ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ৩০ হাজার ৩৫৮ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৯৩৪ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ২৬ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ পটিয়ায় ৬ জন, হাটহাজারী ও রাউজানে ৪ জন করে, ফটিকছড়ি, মিরসরাই, সাতকানিয়া ও বোয়ালখালীতে ২ জন করে এবং সীতাকু-, সন্দ্বীপ, বাঁশখালী ও আনোয়ারায় ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কেউ মারা যাননি। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩৮৩ জনই রয়েছে। এর মধ্যে ২৮১ জন শহরের ও ১০২ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৬৬ জনকে। ফলে মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৬১৮ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৫৬৮ জন ও বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ্য হন ২৯ হাজার ৫০ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ৯৪ জন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বাসস’কে বলেন, ‘সংক্রমণ হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সাধারণ মানুষের বেপরোয়া চলাফেরা ও মাত্রাতিরিক্ত জনসমাগমের আয়োজনগুলো ভাইরাস ছড়ানোর উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছে। চট্টগ্রামে অতিরিক্ত মানুষ জড়ো করিয়ে অনুষ্ঠানের প্রবণতা বেশি থাকায় এখানে দ্রুত সংক্রমণ বেড়েছে। ফলে প্রশাসন বাধ্য হয়ে এখানে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক যেকোনো অনুষ্ঠানে অতিথি ১শ’ জনে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে অভিযানের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করা বা জরিমানা করার পদক্ষেপ চলমান আছে। আমাদের চেষ্টা হচ্ছে, যেকোনো উপায়ে প্রত্যেক মানুষের মুখে মাস্ক তুলে দেয়া।’
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৩৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা হয় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে গ্রামের ৩ জনসহ ৫৩ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৭ জনসহ ৮২ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২২ জনের নমুনায় শহরের ১ জন ও গ্রামের ১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩২১, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১১৬ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শেভরনে গ্রামের ১০টিসহ ৬৮, ইম্পেরিয়ালে গ্রামের ৩টিসহ ৫২ এবং মা-শিশু’তে গ্রামের ২টিসহ ১২টি নমুনায় ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে।
চট্টগ্রামের ১৫টি নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবক’টিরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
তবে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ, চমেকে ১৫ দশমিক ৬৮, সিভাসু’তে ৯ দশমিক ০৯, শেভরনে ২১ দশমিক ১৮, ইম্পেরিয়ালে ৪৪ দশমিক ৮৩ এবং মা ও শিশুতে ৩৮ দশমিক ৭১ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। কক্সবাজার মেডিকেলে গতকালও সংক্রমণ হার শূন্য শতাংশই ছিল।