করোনাভাইরাসে চট্টগ্রামে ১০০ দিনের সর্বোচ্চ সংক্রমণ

308

চট্টগ্রাম, ১৯ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দুইশ’ ছাড়িয়ে গেল। গত ২৪ ঘণ্টায় ২১২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এ সময়ে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। গত বছরের ৭ ডিসেম্বরের পর একদিনে এটাই সর্বোচ্চ সংক্রমণ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর পাঁচটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ২ হাজার ৪৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ২১২ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৮৩ জন এবং ১২ উপজেলার ২৯ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৭ হাজার ২৪০ জন। এদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৯ হাজার ২৫৮ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৭৯৯ জন। উপজেলা পর্যায়ে শনাক্ত ২৯ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ৭ জন, সীতাকু- ও বাঁশখালীতে ৪ জন করে, পটিয়া ও রাউজানে ৩ জন করে, সাতকানিয়ায় ২ জন এবং ফটিকছড়ি, মিরসরাই, সন্দ্বীপ, লোহাগাড়া, আনোয়ারা ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৮৩ জনই রয়েছে। এর মধ্যে ২৮১ জন শহরের ও ১০২ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৫৫ জনকে। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩২৫ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৫৪০ জন ও ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ২৮ হাজার ৭৮৫ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ২০ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ৩৪ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে ১০০ দিনের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ সংক্রমণ। সর্বশেষ ৭ ডিসেম্বর এর চেয়ে বেশি ২১৩ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় এক রোগীর মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয় ১৬ মার্চ, ১৮৩ জন। সংক্রমণ হার ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। তবে এ সময়ে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটে ৩ তারিখে। এদিন ১ হাজার ২৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৬৫ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১৩ দশমিক ০১ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ধরা পড়ে ২৮ তারিখে। এদিন ১১৩ জন নতুন বাহক শনাক্ত এবং করোনায় ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণ হার ছিল ৮ দশমিক ০২ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টা ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয় বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে। এখানে ৮৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ১২ জনসহ ৭৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এখানে গ্রামের ২ জনসহ ৪২ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৬২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৯ জনসহ ৭৩ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হলে শহরের ৬ জন ও গ্রামের ৪ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। মা ও শিশু হাসপাতালে ২৩ টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ১ জনসহ ১৩ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়।
চট্টগ্রামের ৯৩ টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় গ্রামের একটি ছাড়া অবশিষ্ট সবগুলোরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
তবে, এদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) এবং বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে শেভরনে ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ৫ দশমিক ৩২, চমেকে ১১ দশমিক ৬০, আরটিআরএলে ৪৩ দশমিক ৪৮, মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৬ দশমিক ৫২ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ১ দশমিক ০৭ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।