বাসস দেশ-১৫ : চট্টগ্রামে ৭৮ দিনের মধ্যে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ

82

বাসস দেশ-১৫
চট্টগ্রাম-কোভিড
চট্টগ্রামে ৭৮ দিনের মধ্যে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ
চট্টগ্রাম, ১৭ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে নতুন ১৮৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গত ৭৮ দিনের মধ্যে এটাই চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ সংখ্যক সংক্রমণ। তবে এ সময়ে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ এরচেয়ে বেশি ২০৯ জন শনাক্ত হয়েছিল ২৮ ডিসেম্বর।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, মঙ্গলবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর আটটি ল্যাবে চট্টগ্রামের ২ হাজার ১৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ১৮৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। নতুন শনাক্তদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৫৯ জন এবং আট উপজেলার ২৪ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৬ হাজার ৮৬৯ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৯ হাজার ১০৭ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৭৬২ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ২৪ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ৭ জন, পটিয়ায় ৫ জন, সীতাকু-ে ৪ জন, লোহাগাড়ায় ৩ জন, রাউজানে ২ জন এবং সাতকানিয়া, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। ফলে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩৮৩ জনই রয়েছে। এর মধ্যে ২৮১ জন শহরের ও ১০২ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৭৯ জনকে। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ২১০ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৫৩০ জন ও ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ২৮ হাজার ৬১০ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ২৮ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১ হাজার ১৪ জন।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও চলতি মাসের ১৬ দিনের মধ্যে গতকাল শনাক্ত বাহক সংখ্যাই সর্বোচ্চ। ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ধরা পড়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১১৩ জন। এ মাসে মাত্র দু’দিন রোগীর সংখ্যা শতক ছাড়িয়েছিল। জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছিল ৪ জানুয়ারি ১৬৫ জন। এ মাসে একশ’র বেশি বাহক শনাক্ত হয় ১১ দিন। চলতি মাসের ১৬ দিনের ১০ দিন চিহ্নিত রোগীর সংখ্যা শতক ছাড়িয়েছে। গতকালের আগে এ মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ১৪ মাচর্, ১৫৩ জন। দুই শতাধিক আক্রান্ত চিহ্নিত হয় ডিসেম্বরে ৭ দিন এবং নভেম্বরে ৪ দিন। এ সময়ের সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটে ২৯ নভেম্বর, ২৯১ জন। তবে করোনাকালে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ আক্রান্ত শনাক্ত হয় ৩০ জুন, ৪৪৫ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৭৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে গ্রামের ২ জনসহ ২৯ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৬৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৯ জনসহ ৬৭ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৯৪ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৭ টিসহ ১৯ টিতে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে (সিভাসু) ৪৫ জনের নমুনায় গ্রামের ৩ জনসহ ৯ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৯ জনের নমুনা পরীক্ষা হলে ৪ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। এরা সকলেই শহরের বাসিন্দা।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৪৫১, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৭৪ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ২৪, ২৩ ও ৮ জনের শরীরে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে।
তবে, এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ, চমেকে ৯ দশমিক ৮৮, চবি’তে ২০ দশমিক ২১, সিভাসু’তে ২০, আরটিআরএলে ৪৪ দশমিক ৪৪, শেভরনে ৫ দশমিক ৩২, ইম্পেরিয়ালে ৩১ দশমিক ০৮ এবং মা ও শিশুতে ৩০ দশমিক ৭৭ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।
বাসস/জিই/কেএস/১৫৪০/কেকে