বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

110

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল
বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে অতীতের সরকারগুলোর পরনির্ভরশীলতার সমালোচনা করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চিন্তা হলো স্বাবলম্বী হয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলা। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের নিজের পায়ে চলতে হবে। নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে হবে। সেজন্য বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল গঠন করলাম।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদেরকে নিজের পায়ে চলতে হবে। নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের দেশকে উন্নত করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কাজ করার দরকার আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। এ সময় আমরা অনেককে হারিয়েছি। সাথে সাথে এই করোনায় আমরা আরেকটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি, আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে, রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে। এই রিজার্ভের টাকা কীভাবে উন্নয়নে ব্যয় করতে পারি, সেটাই চিন্তা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বার বার অন্যের কাছে হাত পাতা, আর ধার না করে নিজেদের অর্থ দিয়ে নিজেদের অবকাঠোমো উন্নয়ন করা এবং যারা বিনিয়োগ করতে আসবে তাদের ঋণ নেয়ার বিষয়টি আমরা নিজেদের অর্থ থেকে ব্যয় করতে পারি।
তিনি বলেন, ‘তাতে দেশেরও লাভ, আমাদেরও আত্মবিশ্বাস জন্মাবে। আমরা যে পারি, বিশ্বের কাছে তা দেখাতে পারি।’
দুর্যোগ-দুর্বিপাকের দেশ বিধায় যে কোন সংকটের জন্য প্রস্তুত থাকার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ৬ মাসের আমদানির টাকা রাখতে হবে। যে কোনো সঙ্কটে খাদ্য ক্রয় যেন করতে পারি। ছয় মাসের টাকা রিজার্ভে রেখে বাকি টাকা বিনিয়োগ করতে পারি। এজন্য আমরা নিজস্ব তহবিল গঠন করার চিন্তা করেছি। এ থেকে বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিতে পারবে। আর অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করবো।’
তাঁর নিজস্ব উদ্যোগেই পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন ‘পায়রা বন্দর আমি নিজেই করছি। মংলা বন্দর চালু করেছি। মহেশখালীর মাতারবাড়ি বন্দর তৈরি হয়ে গেছে। সেটা আরও উন্নত হবে। আমাদের একটা গভীর সমুদ্র বন্দরও করতে হবে।’
তিনি বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের কতগুলো সুবিধা রয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটানকে আমাদের বন্দরগুলো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছি। আরও অনেক দেশও ব্যবহার করতে পারবে।’
এ সময় প্রধানমমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের অত্যন্ত আনন্দের দিন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিজেদের অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলাম। রামনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নের ছোঁয়া সারাদেশে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন তখনই হবে, দেশকে যখন চিনতে পারবে, ভালোবাসতে পারবে। চিন্তা চেতনায় বিষয়টি আসবে। দেশটি সবসময় গণতান্ত্রিক ধারায় থাকেনি। তারপরও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। আওয়ামী লীগ ছাড়া যারাই ক্ষমতায় আসছে, তাদের মাথায় ছিল অন্যের কাছে হাত পাতা। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, এটা তাদের মাথায় ছিল না।’
শেখ হাসিনা তাঁর উন্নয়নের ম্যাজিক সম্পর্কে বলেন, ‘আমি বলি, এটা কোনো ম্যাজিক নয়। ম্যাজিক হচ্ছে, দেশপ্রেম। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ। আমার চিন্তা দেশের মানুষকে দু’পায়ে দাঁড় করিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৫২০/-আসাচৌ