চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি

311

চট্টগ্রাম, ১২ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩১ জন করোনা শনাক্ত হন। সংক্রমণের হার ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এ সময় করোনায় আক্রান্তদের একজনের মৃত্যু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৯৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ১৩১ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১১২ জন এবং সাত উপজেলার ১৯ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৬ হাজার ১৭৮ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৮ হাজার ৫০০ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৬৭৮ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ২৭ জনের মধ্যে হাটহাজারীতে ৭ জন, পটিয়ায় ৫ জন, সীতাকু-ে ৩ জন, এবং মিরসরাই, লোহাগাড়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গতকালসহ চলতি মাসের ১১ দিনের সাত দিন শনাক্ত রোগী একশ’ ছাড়িয়েছে এবং ৪ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। একশ’র বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয় ১ মার্চ ১০৯ জন, ৪ মার্চ ১০৭ জন, ৭ মার্চ ১১৪ জন ও ৮ মার্চ ১২২ জন। চলতি মাসের সবচেয়ে কম সংক্রমণ ছিল ৬ মার্চ, ৬৩ জন। অথচ, গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ও শেষদিন ছাড়া বাকী ২৬ দিন আক্রান্তের সংখ্যা একশ’র নিচে ছিল। করোনাকালের সর্বনি¤েœর রেকর্ডটিও ফেব্রুয়ারিতেই। ৬ ফেব্রুয়ারি ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। সংখ্যা ও হারে এটাই চট্টগ্রামে সর্বনি¤েœর রেকর্ড। জানুয়ারি মাসেও ২০ দিন শনাক্ত রোগী একশ’র নিচে ছিল।
জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৩৭৯ জন। এর মধ্যে ২৭৮ জন শহরের ও ১০১ জন গ্রামের। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৭৯ জনকে। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৮৬২ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৪৯২ জন ও বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ্য হন ২৮ হাজার ৩৭০ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৩৯ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৯৬৬ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৯৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে গ্রামের ৩ জনসহ ২০ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৫৮০ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩ জনসহ ৩৫ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৯০টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৭টি ও শহরের ৭টিতে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে স্থাপিত আরটিআরএলে ১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ২টিসহ ৬টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
বেসরকারি তিন ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২৩৬, ইম্পেরিয়ালে হাসপাতালে ১০০ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ১৮, ২৫ ও ১৩ টি নমুনায় ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। চট্টগ্রামের ১৪ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই নেগেটিভ আসে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ২ দশমিক ১৩ শতাংশ, চমেকে ৬ দশমিক ০৩, চবি’তে ১৫ দশমিক ৫৫, আরটিআরএলে ৪০ শতাংশ, শেভরনে ৭ দশমিক ৬৩, ইম্পেরিয়ালে ২৫ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৬৫ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।