মাগুরায় পেয়ারা চাষে সুশান্ত কুমার বিশ্বাসের সাফল্য

590

মাগুরা, ৯ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ করে লাভবান হয়েছেন মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার বড়ালিদহ গ্রামের কৃষক সুশান্ত কুমার বিশ্বাস। চার একর জমিতে ৩ বছর আগে লাগানো বাগান থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছেন তিনি। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে শুধুমাত্র জৈব সার ব্যাবহার করে গাছ পরিচর্যা করেছেন। এ কারণে আরো ৫ বছর এ বাগান থেকে ভালো ফলনের পাশাপাশি আর্থিকভাবে আরো বেশি লাভবান হবেন বলেও তিনি দাবি করেন ।
সুশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, শ্রীপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে ভেটেনারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। চার বছর আগে চাকুরী থেকে অবসর নেন। এরপর কৃষি কাজ শুরু করেন তিনি। দুবাই প্রবাসী ভাতিজা শিশির বিশ্বাসের পরামর্শে বাড়ির পাশের চার একর জমিতে পেয়ারা বাগান শুরু করেন। চুয়াডাঙ্গা থেকে গোল্ডেন এইড নামের উচ্চফলনশীল জাতের পেয়ারার চারা সংগ্রহ করেন। মাগুরায় চাষ হওয়া পেয়ারার নতুন এ জাতটি মূলত ভারতীয়। এ জাতটিতে সারা বছর ফল পাওয়া যায়। চারা রোপণের এক বছর পর থেকেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। বাগান করতে তার মোট খরচ হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। গত ৩ বছরে বিক্রি করেছেন প্রায় ৪০ লাখ টাকার পেয়ারা ।
কথা প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান, পেয়ারা বাগানে সম্পূর্ণভাবে জৈব সার ব্যবহার করেছি। নিম পাতার রস, কালকছুন্দি পাতার রস, গরুর চুনা, মাছের আশ ও গোবর মিশিয়ে জৈব সার তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া গাছের গোড়ায় খৈলের গুড়া ব্যবহার করা হয়। এর পাশাপাশি প্ঁোকামাকড় দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে ফেরোমন ট্রাপ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে সম্পূর্ণ অর্গানিকভাবে তার বাগানের পেয়ারার ফলন ভালো হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে পেয়ারা চাষে তাকে প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে। তার এ কাজে সহযোগিতা করছে মোজাম্মেলন হোসেন ও শিপন বিশ্বাস নামে স্থানীয় দুই যুবক। তারা ক্ষেত পরিচর্যার পাশাপাশি ঢাকা, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পেয়ারা বিক্রিতে সহযোগিতা করছে। এর ফলে তাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতায় পাওয়ায় সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে পারছেন তারা।
মাগুরা জেলা কষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক জানান, মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার বড়ালিদহ গ্রামের কৃষক সুশান্ত কুমার বিশ্বাস নতুন জাতের এ পেয়রা চাষে ভালো ফলন পেয়েছেন। আমরা তার ক্ষেতটি পরিদর্শন করেছি। এ পেয়ারা বাগানটিতে জৈব সার ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছি।