চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে

300

চট্টগ্রাম, ৯ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি মাসে আট দিনের চারদিন সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা একশ’র বেশি হলো। গত মাসে দু’দিন মাত্র একশ’র বেশি আক্রান্ত হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৮২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ১২২ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১০৯ জন ও আট উপজেলার ১৩ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে ৩ জন করে হাটহাজারী ও সীতাকু-ে, সন্দ্বীপ ও পটিয়ায় ২ জন করে এবং রাউজান, মিরসরাই ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৫ হাজার ৭৮৮ জন। এর মধ্যে শহরের ২৮ হাজার ১৭২ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৬১৬ জন।
গতকাল করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৭৮ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৭৭ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৫০ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৬৬৭ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৪৭২ জন এবং বাসায় থেকে চিকিৎসায় সুস্থ্য হন ২৮ হাজার ১৯৫ জন। আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৫ জন। ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৯৪৮ জন।
উল্লেখ্য, গতকালসহ চলতি মাসের আট দিনের চার দিন শনাক্ত রোগীর একশ’ ছাড়িয়েছে। ১ মার্চ ১ হাজার ৮২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ১০৯ জনের শরীরে সংক্রমণ চিহ্নিত হয়। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ৪ মার্চ ১ হাজার ৯৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। ৭ মার্চ ১১৪ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। এ সময়ে আক্রান্তদের একজনের মৃত্যু হয়। এ মাসে সবচেয়ে কম সংক্রমণ ছিল ৬ মার্চ। এদিন ১ হাজার ৬০৭ জনের নমুনায় ৬৩ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। একজনের মৃত্যু হয়। অথচ, গত জানুয়ারি মাসে ২০ দিন এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৬ দিন আক্রান্তের সংখ্যা একশ’র নিচে ছিল। করোনাকালের সর্বনি¤েœর রেকর্ডটিও ফেব্রুয়ারি মাসে। ৬ ফেব্রুয়ারি সংখ্যা ও হারে চট্টগ্রামে সর্বনি¤œ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এদিন ১ হাজার ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৮৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ২ জনসহ ২২ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫৭০ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ১ জনসহ ৩২ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ২ জন ও গ্রামের ১ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৫১টি নমুনার ৬টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। এ নমুনাগুলোর সব বাহকই শহরের বাসিন্দা। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ১৪ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৫ জন ও গ্রামের ৪ জনের পজিটিভ রেজাল্ট আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ২৩১টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৩টিসহ ২৪টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫৩টি নমুনার মধ্যে গ্রামের একটিসহ ১৭টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১৯টির মধ্যে গ্রামের একটিসহ ৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের ৩টি নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় তিনটিরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ, চমেকে ৫ দশমিক ৬১, চবি’তে ৮ দশমিক ৩৩, সিভাসু’তে ১১ দশমিক ৭৬, আরটিআরএলে ৬৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, শেভরনে ১০ দশমিক ৩৯, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩২ দশমিক ০৭, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং কক্সবাজার মেডিকেল ল্যাবে শূন্য শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।