বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (প্রথম কিস্তি) : ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মর্মার্থ বিএনপির না বোঝাটাই স্বাভাবিক : প্রধানমন্ত্রী

185

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (প্রথম কিস্তি)
শেখ হাসিনা-আওয়ামী লীগ-আলোচনা (প্রথম কিস্তি)
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মর্মার্থ বিএনপির না বোঝাটাই স্বাভাবিক : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ৮ মার্চ, ২০২১ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মর্মার্থ বিএনপির না বোঝাটাই স্বাভাবিক। কারণ, অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণাকারির এই দলটি বরাবরই পরাজিত শক্তির আজ্ঞাবহ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর পক্ষে গণহত্যা শুরু করেছিল, পাকিস্তানী জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে যাচ্ছিল এবং যে জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতাদখলকারি হিসেবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ক্ষমতায় বসে অবৈধভাবে দল গঠন করেছে, সেই দলের নেতারা ৭ মার্চের ভাষণের মর্ম বুঝবে না এটাইতো খুব স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, ‘এতে যেমন অবাক হওয়ার কিছু নেই। তেমনি এদের নিয়ে আলোচনা করারও কিছু নেই। ধরেই নিতে হবে এরা এখনও সেই পুরনো প্রভুদের ভুলতে পারেনি। তাদের পালিত দল হিসেইে তারা আছে, এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’
তিনি ক্ষোভের সংগে এ সম্পর্কে আরো বলেন, ‘পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী যা বোঝে এরাও তাই বোঝে তবে, বাঙালি যা বোঝে তারা তা বোঝে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনার সভাপতিত্বকালে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দলীয় কার্যালয় ২৩, বঙ্গবন্ধু এভেনিউতে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের কিছু মানুষ আছে তারা কিছুই দেখে না, কিছুই বোঝে না, কিছুই খুঁজেও পায় না। তারা না-ই পেতে পারে, তবে, হঠাৎ আমরা দেখলাম তারা ৭ মার্চের দিবসটি উদযাপন করতে যাচ্ছে (বিএনপি)। অথচ এই ভাষণে নাকি তারা কিছুই খুঁজে পায়নি। তবে, ভাষণটি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জায়গা করে নিয়েছে।
তিনি ভাষণের তাৎপর্য অনুধাবনে ব্যর্থদের ‘নির্বোধ’ আখ্যায়িত করে বলেন, দেশের এই লোকজন তাৎপর্য না বুঝলেও একজন ব্রিটিশ সাংবাদিক জ্যাকব এফ ফিল্ড আড়াই হাজার বছরের মানুষের মাঝে উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী ভাষণ নিয়ে গবেষণা করে যে ৪১টি ভাষণ নির্বাচন করেছেন তার মধ্যে ৭ মার্চের ভাষণ অন্যতম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কো আবার এই ভাষণটিকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ^ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভূক্ত করেছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন পত্রিকা নিউজ উইক তাদের ১৯৭১ সালের এপ্রিল সংখ্যায় জাতির পিতার ছবি দিয়ে তাদের পত্রিকার কভার স্টোরি করে এবং জাতির পিতাকে সেখানে ‘পয়েট অব পলিটিক্স’ বলে আখ্যা দেয়। সে সময় পৃথিবীর অনেকগুলো দেশের পত্র-পত্রিকায় এ ধরনের খবর প্রকাশিত হয়।
তিনি বিএনপি নেতৃবৃন্দের এই ভাষণে ‘স্বাধীনতার কোন ঘোষণা’ না পাওয়া সম্পর্কে বলেন, আমি আমার দলের নেতা-কর্মীদের বলতে চাই এরা পাবে না। কারণ, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীও পায়নি। তারা অনেক খুঁজেছে। তাই, আমার মনে হয়, এরা ঐ পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর পদলেহনকারী, তোষামোদী ও তোষামোদকারীদের দল।
পাকিস্তানী জেনারেলদের আত্মজীবনীসহ বিভিন্ন সূত্রের তথ্য মতে, পাকিস্তান বাহিনী সে সময় সম্পূর্ণ তৈরী ছিল মুজিব কি ভাষণ দেয় (স্বাধীনতা ঘোষণা করলেই) মাঠের সব জনতাকে আক্রমণ করে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার। অথচ জাতির পিতা জানতেন কি ভাষায় বললে জনগণ বুঝবে, তিনি সেভাবেই বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী একে বঙ্গবন্ধুর রণকৌশল বলেও উল্লেখ করেন।
দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আলোচনা সভায় প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন।
আরো বক্তৃতা করেন-দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কেন্দ্রীয় কার্যানির্বাহী সদস্য ও বিএনএ মহাসচিব ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহানও বক্তৃতা করেন।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক সম্পাদিত এবং ইয়াসিন কবির জয় প্রকাশিত ‘মুক্তির ডাক’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
চলবে/বাসস/এএসজি-এফএন/২০৩৫/আরজি