গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে সকল রাজনৈতিক দলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহবান রাষ্ট্রপতির

382

ঢাকা, ২০ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য।
তিনি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে সকল রাজনৈতিক দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবে।’
মো. আবদুল হামিদ ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা উপলক্ষে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামীকাল শোকাবহ ২১ আগস্ট। বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ২০০৪ সালের এদিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। কাপুরুষোচিত এ হামলায় শহিদ হন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শোকাবহ ২১ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনায় সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা।’
তিনি উল্লেখ করেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের ফসল আমাদের মহান স্বাধীনতা। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ পরবর্তী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে শাসকের বুলেটের আঘাতে। তাই এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথ কখনো মসৃণ ছিলো না। নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে চলেছে। অগণতান্ত্রিক ও অশুভ শক্তি বারবার গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করেছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ওপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। এদিন স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক চক্রের হাতে অকালে জীবন দিতে হয়েছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। এরপরও ঘাতকচক্র থেমে থাকেনি। তাঁরা বঙ্গবন্ধু তনয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট পরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভা চলাকালীন ইতিহাসের বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালায়। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেদিন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান দলের ২৩ জন নেতা-কর্মী। আহত হন বহু নেতা-কর্মী। এ হামলায় রবঁচে থাকা অনেকে আজো পঙ্গুত্ববরণ করে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
তিন বলেন, ঘাতক চক্রের লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বহীন করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে রুখে দেয়া এবং দেশে স্বৈরশাসন ও জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেয়নি।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণ একটি আত্মমর্যাদাশীল ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে স্বপ্রণোদিত হয়ে এগিয়ে আসবেন।
তিনি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় শাহাদাত বরণকারী সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।