বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ : গ্রেনেড হামলার বিচারের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে : প্রধানমন্ত্রী

146

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪
শেখ হাসিনা-গ্রেনেড-আইনের শাসন
গ্রেনেড হামলার বিচারের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ২০ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২১শে আগস্টের হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা এবং মদদদাতাদের সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে দেশ থেকে হত্যা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের চির অবসান এবং দেশে আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।
আগামীকাল ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করি, ২১শে আগস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ, উদার, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের সকল নাগরিক ঐক্যবদ্ধ হবেন।’
আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। আমাদের সরকার সকল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিহত করে দেশে শান্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের কোন স্থান হবে না, এসব নির্মূল করবই। দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট যখনই সরকারে এসেছে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত থেকেছে। বিএনপি-জামায়াতের সকল অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দেশের জনগণ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পুনরায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দেশকে দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার কাজ শুরু করি। বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ পুনরায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১শে আগস্ট একটি কলঙ্কময় দিন। ২০০৪ সালের এ দিনে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘চারিদিকে যখন গ্রেনেড বিস্ফোরিত হচ্ছে, তখন আমাদের নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীরা মানববর্ম তৈরি করে আমাকে রক্ষা করেন। আল্লাহতায়া’লার অশেষ রহমত ও জনগণের দোয়ায় আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাই। তবে সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে আজও পঙ্গুত্বের অভিশাপ বহন করছেন। অনেকে দেহে স্পিøন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। এ হামলার মূল লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়নের ধারাকে স্তব্ধ করে দেওয়া, বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করে হত্যা, ষড়যন্ত্র, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দুুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নারকীয় এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচার করা ছিল সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার কোন পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো হত্যাকারীদের রক্ষায় সবধরণের ব্যবস্থা করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। অনেক আলামত ধ্বংস করে। তদন্তের নামে এই নৃশংস হত্যাকা-কে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে তারা জনগণকে ধোঁকা দিতে ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজানোর মতো ঘৃণ্য কাজ করে। কিন্তু সত্য কখনও চাপা থাকে না। পরবর্তীকালে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তে বেরিয়ে আসে বিএনপি-জামায়াত জোটের অনেক কুশীলব এ হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল।’
গত সাড়ে ৯ বছরে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,‘ আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘ উন্নয়নের রোল মডেল’। সম্প্রতি বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধুৃ স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি।’
বাসস/তবি/বিকেডি/১৭৪৫/-আসচৌ