বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : বিশ্বের সকল ভাষা সংরক্ষণের ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

132

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউট-ভাষণ
বিশ্বের সকল ভাষা সংরক্ষণের ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করলেও পরবর্তী বিএনপি-জমায়াত সরকার এর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল এবং পরবর্তী ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ সরকারই এর নির্মাণ কাজ শেষ করে।
তিনি জনগণের প্রতি তাঁর সরকারকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, জনগণ ভোট দিয়েছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী পালনকালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল আর এখন ‘মুজিববর্ষ’ এবং ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’ সরকারে থেকে উদযাপনের সুযোগ পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা ভাষা মানুষের পরিচয়। এই পরিচয় আমাদের সম্মান এনে দেয়। এজন্য আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে। রক্ত দিয়ে লিখেছি ভাষার অক্ষর। এটা আমাদের গৌরবময় অর্জন। এ প্রসঙ্গে জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতি পিতা বলেন, ‘মাতৃভাষা আন্দোলনে বাঙালিরাই প্রথম রক্ত দিল। দুনিয়ার কোথাও ভাষা আন্দোলনে গুলি করে মানুষ হত্যার নজির নেই।’
তিনি বলেন, সত্যিকারার্থেই ভাষার অধিকারের জন্য কেউ এত রক্ত দেয়নি। এই ভাষার জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। সেই সংগ্রামের হাত ধরেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।
ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রোমন্থন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানীরা আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ওপর কেবল একটি বিজাতীয় ভাষাই চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টাই করে নাই, তাদের দাবি না টিকলে তারা আরবি এবং ল্যাটিন হরফে বাংলা লেখার প্রচলনের উদ্যোগও গ্রহণ করে। সেটা ঠেকানোর জন্যও বাঙালিকে সংগ্রাম করতে হয়েছে এবং একের পর এক এই সংগ্রামের পথ বেয়েই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
তিনি ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য সবাইকে পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের জাতির পিতাকে নিয়ে করা রিপোর্ট যেটি তিনি ১৩ থেকে ১৪ খন্ডে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন সেই সিরিজটি পড়ে দেখার আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অদ দি নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ সিরিজের বইগুলো জাতির পিতার বিরুদ্ধে করা রিপোর্ট নিয়ে প্রকাশিত হলেও এর মাধ্যমে সত্য উপস্থাপিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি বলেন, ভাষার সংরক্ষণ, বিকাশ ও গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদানের জন্য পদক দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। আজ থেকে এ পদক চালু হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভাষার মাসে গুণীজন ও ভাষার প্রতি সম্মান জানাতে পারলাম, এটা আমাদের সৌভাগ্য।
করোনার কারণে নিজের শিক্ষক রফিকুল ইসলামের হাতে সরাসরি পদক তুলে দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারাতেও দুঃখ প্রকাশ করেন।
সরকার প্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রী হলে প্রটোকলের ঘেরাটপে থাকতে হয়, যা একরকম বন্দিদশা। তাই চাইলেও অনেক কিছুই তাঁর নিজের এবং সহকর্মীদের নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশংকায় করা সম্ভব হয় না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এক জায়গায় যেতে গেলে আমার সঙ্গে বহু লোক, নিরাপত্তার লোক, প্রায় হাজার খানেক লোককে রাস্তায় দাঁড় করায়ে নানাভাবে তাদেরকে কাজে লাগায়। তাদের কথা চিন্তা করেই কিন্তু আমি যেতে পারিনি।’
বাসস/এএসজি-এফএন/২০২০/এবিএইচ