বাসস দেশ-৪৯ : ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন: কালো দিন আগামীকাল

114

বাসস দেশ-৪৯
ভোটারবিহীন-নির্বাচন
ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন: কালো দিন আগামীকাল
ঢাকা: ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসের একটি কালো দিন। বিএনপি’র ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের কালো দিন আগামীকাল। বিএনপি তাদের একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক শাসন টিকিয়ে রাখার অশুভ লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এক ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করে।
জন্মগতভাবেই গণতন্ত্র ও বিএনপি’র অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবর রহমানকে সপরিবারে নির্মম হত্যাকা-ের পর স্বৈরশাসনের কবলে নিমজ্জিত হয় বাংলাদেশের জনগণ। নিজের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে বিএনপি নামক বীষবৃক্ষের জন্ম দেয় স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিজেকে অসাংবিধানিকভাবে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এবং হ্যাঁ/না ভোট ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে। পরবর্তীতে জিয়ার দেখানো পথে দীর্ঘ স্বৈরশাসনে বন্দি থাকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র। সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করলেও বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুকের ফ্রিডম পার্টিকে সাথে নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে বিএনপি। এমনকী খুনি ফারুককে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসান বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ১৫০ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়। দেশবাসী ঘৃণাভরে ওই একতরফা নির্বাচনী তামাশা বর্জন করে। নির্বাচন দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা হারায়।
বিএনপির প্রতি জনগণের ঘৃণা ও ক্রোধ বিস্ফোরিত হয় এবং বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলাদেশ। শাসকগোষ্ঠী বিএনপি সব দিক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠিত হয় জনতার মঞ্চ। জনগণের ক্ষোভ ও ঘৃণা গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তরিত হয়। গণদাবির কাছে নতি শিকার করতে বাধ্য হয় স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী। ৩০ মার্চ বিএনপি সরকারের পতন ঘটে। অবশেষে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আপোসহীন নেতৃত্বে বিজয় সূচিত হয় জনগণের।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ ২১ বছর পর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়মা লীগ। জনগণ ফিরে পায় তাদের হারানো ভোটের অধিকার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল প্রতিবন্ধকতা জয় করে উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারায় এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
তারপরও বিএনপি’র ষড়যন্ত্রের রাজনীতি কখনও থেমে থাকেনি। ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে বিএনপি সব সময় নির্বাচনী ব্যবস্থার চোরাগুপ্তা পথ বেছে নিয়েছে। জনগণের প্রতি আস্থা না রেখে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে লিপ্ত থেকেছে। বিএনপি-জামাত অশুভ জোট নির্বাচনী ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বিনষ্ট করতে ২০১৪ সালে সারাদেশে ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকা- চালায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নস্যাতের জন্য বিএনপি-জামাতসহ স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র-সাম্প্রদায়িক শক্তি জোটবদ্ধ হয়ে হত্যা, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টিতে লিপ্ত হয়। স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় জামাত-শিবিরের ঘাতকবাহিনী বিএনপিকে নিয়ে দেশবাসীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে ব্যাপক অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ শত শত নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিএনপি। ফলে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে বিএনপি’র।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্ভাবনা ও সমৃদ্ধির পক্ষে গণরায় প্রদান করে। জনগণের ভালবাসায় অভিষিক্ত হয়ে টানা তৃতীয়বারসহ চতুর্থ বারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন।
ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের কালো দিন উপলক্ষে আগামীকাল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন গুলো বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল সাড়ে ১০ টায় ধানমন্ডি রাসেল স্কয়ারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
এদিকে, দুপুর ২ টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ আবু আহমেদ মন্নাফী।
বাসস/সবি/বিকেডি/১৯৪৫/-কেএমকে