কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর চরে মরিচের সমারোহ

527

কুড়িগ্রাম, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : চরের বুকে সবুজের আল্পনা এঁকে দিয়েছে মরিচ। বিস্তৃত এলাকাজুড়েই সবুজের এই মনকাড়া দৃশ্য বিমোহিত করে সকলকে। ভালো ফলন আর দাম পেয়ে খুশি কৃষকও। গেলো বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়লেও এ ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে নব উদ্যমে মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন জেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা।
কুড়িগ্রামের দুধকুমার, ফুলকুমার, ব্রহ্মপুত্র, সঙ্কোষসহ অন্যান্য নদীর অববাহিকায় দেখা গেছে এমন সবুজ বৈচিত্র্য। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী, চরবেরুবাড়ী, বামডাঙ্গা, নারায়ণপুর, বল্লভের খাস, নুনখাওয়া, কচাকাটা, কেদারসহ কয়েক ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় চাষ মরিচের। ফসলের মাঠে কৃষকের ছোঁয়া আর সঠিক পরিচর্যায় মরিচ গাছও হয়ে উঠেছে হৃষ্টপুষ্ট। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে ফুল আর মরিচের বাহার। তা দেখেই ভরে উঠছে কৃষকের মন।
অল্প খরচে অধিক লাভের আশায় ক্ষেতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষাণ-কৃষাণি। দুপুর গড়াতেই মারিচ তুলে বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন কৃষকরা। অনেকে মরিচ তুলে বাড়িতে নিয়ে কিংবা জমিতেই পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করেন। তবে জমিতে পাইকারী বিক্রি করলে লাভ কম হয় বলেও জানান তারা। ভাঙন ও বন্যা কবলিত এলাকা হওয়ায় এসব চরাঞ্চলে এখনও ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তাই পরিবহন খরচও বেশি। কৃষকরা বলছেন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে আরও ভালো দামে মরিচ বিক্রি করতে পারতেন তারা।
দুধকুমারের চর সবুজপাড়ার কৃষক সাইফুর রহমান জানান, চরে ২ বিঘা জমি বছরে ৩ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে মরিচ চাষ শুরু করেছেন তিনি। এতে তার ব্যয় হয়েছে ৩৪ হাজার টাকা। তবে এ পর্যন্ত মরিচ বিক্রি করেছেন প্রায় ৭০ হাজার টাকার। তিনি আরও জানান প্রথমদিকে ৩ হাজার টাকা মন বিক্রি করলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত। তবে মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত আরও প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারবেন বলেও আশা করছেন তিনি। অধিক উৎপাদন ও ভালো দাম পেয়ে মরিচ বেচে লাভবান এবার তার মতো সকল মরিচ চাষী।
নাগেশ্বরী কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৮০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ২৭৮ হেক্টর জমিতে। কৃষি প্রণোদনা হিসেবে উপজেলায় ৯শ জন কৃষককে ৩শ গ্রাম করে মরিচ বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি সার, ৫ কেজি করে এমওপি সার দেয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাজেন্দ্রনাথ রায় বলেন- কীভাবে মরিচের ফলন হয় এবং ভালো ফলন পেয়ে কৃষকরা লাভবান হয় সেদিকটা লক্ষ্য রেখে আমরা অফিসিয়ালভাবে তাদেরকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছি।