প্রথম দিন সমান-সমান বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ

320

ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ (বাসস) : আজ থেকে শুরু হওয়া ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন শেষে সমান-সমান অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
প্রথমে ব্যাট করে এনক্রুমার বোনারের হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২২৩ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বোনার ৭৪ রানে অপরাজিত আছেন।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টে ইনজুরিতে পড়া সাদমান ইসলাম ও সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে ঢাকা টেস্টের একাদশে সুযোগ পান সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুন। এছাড়া পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে ডান-হাতি আবু জায়েদকে একাদশে নেয়া হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশে একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। পেসার কেমার রোচের পরিবর্তে সুযোগ হয়েছে আলজারি জোসেফের।
শেষ টেস্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সতীর্থ জন ক্যাম্পবেলকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দারুন সূচনা এনে দেন অধিনায়ক ক্রেইগ ব্যাথওয়েট। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে দলের স্কোর হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌছে দেন ব্র্য্যাথওয়েট।
তবে ২১তম ওভারের চতুর্থ বলে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁ-স্পিনার তাইজুল ইসলাম। কাম্পবেলের বিপক্ষে বাংলাদেশের লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দেন অন-ফিল্ড আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ক্যাম্পবেল। আউট হওয়ার আগে ৬৮ বল খেলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৬ রান করেন তিনি।
এরপর তিন নম্বরে নামা শায়নে মোসলেকে নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যান ন ব্র্যাথওয়েট। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১ উইকেটে ৮৪ রান।
বিরতি থেকে ফিরে মোসলেকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পেসার জায়েদের বলে ইনসাইড-এজড হয়ে বোল্ড হন ৩৮ বলে ৭ রান করা মোসেলে।
মোসলের আউটের ক্রিজে ব্যাথওয়েটের সঙ্গী হন এনক্রুমার বোনার। একপ্রান্ত দিয়ে রানের চাকা সচল রেখে ৩৯তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর তিন অংকে নিয়ে যান ব্র্যাথওয়েট। উইকেটে সেট হয়ে থাকা ব্যাথওয়েট হাফ-সেঞ্চুরির প্রত্যাশায় ছিলেন। কিন্তু অকেশনাল বোলার হিসেবে আক্রমনে এসে নিজের তৃতীয় ওভারেই ব্র্যাথওয়েটের মত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানকে শিকার করেন সৌম্য। প্রথম স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ৪৭ রানে আউট হন ব্র্যাথওয়েট। তার ১২২ বলের ইনিংসে ৪টি চার ছিলো।
ব্র্যাথওয়েটকে হারিয়ে যখন চাপ অনুভব করছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তখন সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দেন জায়েদ। প্রথম টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে অনবদ্য ২১০ রান করে অবিশ্বাস্যভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ম্যাচ জেতানো কাইল মায়ারসকে ৫ রানের বেশি করতে দেননি জায়েদ। এতে ১১৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এ অবস্থায় চা-বিরতি পর্যন্ত আর কোন উইকেট পতন হতে দেননি এনক্রুমার বোনার-জার্মেই ব্লাকউড। ৪ উইকেটে ১৪৬ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় ক্যারিবীয়রা। এ সময় বানার ৩০ ও ব্লাকউড ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বিরতি থেকে ফিরে দলের ইনিংসের ভিত গড়তে থাকেন বোনার ও ব্যøাকউড। দুই ওপেনারের পর এ জুটিও হাফ সেঞ্চুরি পুর্ন করেন। এতে ভালো অবস্থায় পৌঁছাতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই পথে বাঁধা হয়ে দাড়ান তাইজুল। নিজের ডেলিভারিতে নিজেই ক্যাচ নিয়ে ব্ল্যাকউডকে থামান তাইজুল। ১৪৫ বলে বোনার-ব্লাকউডের জুটির সমাপ্তি ঘটে। ৫টি চারে ২৮ রান করেন ব্লাকউড।
দলীয় ১৭৮ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন বোনার-উইকেটরক্ষক জসুয়া ডা সিলভা। দিন শেষে ৪৫ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে যান তারা। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন বোনার। ১৭৩ বলের ইনিংসে ৬টি চার মারেন তিনি। ২০ রানে অপরাজিত থাকেন সিলভা।
বাংলাদেশের জায়েদ-তাইজুল ২টি করে এবং মিডিয়াম পেসার সৌম্য ১টি উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড :
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস :
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ক শান্ত ব সৌম্য ৪৭
জন ক্যাম্পবেল এলবিডব্লু ব তাইজুল ৩৬
শায়নে মোসলে বোল্ড ব জায়েদ ৭
এনক্রুমার বোনার অপরাজিত ৭৪
কাইল মায়ার্স ক সৌম্য ব জায়েদ ৫
জার্মেই ব্ল্যাকউড ক এন্ড ব তাইজুল ২৮
জসুয়া ডা সিলভা অপরাজিত ২২
অতিরিক্ত (লে বা-২, নো-২) ৪
মোট (৫ উইকেট, ৯০ ওভার) ২২৩
উইকেট পতন : ১/৬৬ (ক্যাম্পবেল), ২/৮৭ (মোসলে), ৩/১০৪ (ব্র্যাথওয়েট), ৪/১১৬ (মায়র্স), ৫/১৭৮ (ব্লাকউড)।
বাংলাদেশ বোলিং :
জায়েদ : ১৮-৫-৪৬-২,
মিরাজ : ২২-৫-৩৯-০,
নাইম : ১২-১-৪২-০।
তাইজুল : ৩০-৫-৬৪-২ (নো-২),
সৌম্য : ৮-১-৩০-১।