বাসস দেশ-৩ : বরগুনায় গোলের গুড়ে হাজার মানুষের কর্মসংস্থান

120

বাসস দেশ-৩
গোলের গুড়
বরগুনায় গোলের গুড়ে হাজার মানুষের কর্মসংস্থান
বরগুনা, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস): জেলার তিন শতাধিক চাষি পরিবার বছরের এ সময়টাতে গোলের গুড় তৈরি ও বিপণন করেন। শীতের মৌসুমে গোল-গাছকে ঘিরে কর্মসংস্থান হয় প্রায় দেড় হাজার মানুষের।
বরগুনা জেলার বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যায় তালতলী উপজেলার গোল-গাছের রসের গুড়। গোল-পাতার রস সংগ্রহ আর গুড় (মিঠা) তৈরির কর্মযজ্ঞে এ সময়টাতে বদলে যায় পুরো গেন্ডামারা, বেহেলা গ্রামগুলোর চিত্র। শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সাথেসাথে প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে গাছিরা ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়েন রস সংগ্রহে। শীতের চার মাস গোলের রসকে ঘিরে কর্মসংস্থান হয় দেড় হাজার মানুষের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, তালতলী উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে গোল গাছের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এসব বাগান থেকে সংগৃহিত রস জ্বালিয়ে প্রতি শীতে ১০ হাজার টনেরও বেশি গুড় উৎপাদিত হয়। সবচেয়ে বেশি গাছ বেহেলা গ্রামে। এখানে গোল-গাছের সংখ্যা ১৫ হাজার। গেন্ডামারা গ্রামে রয়েছে হাজার পাঁচেক গাছ।
চাষি (গোল গাছিরা) ও গুড়ের কারিগরদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, একজন গাছি প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শ গাছের রস আহরণ করেন। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির শেষ অবধি গোল গাছগুলো রস সংগ্রহের উপযোগী থাকে। গাছে গাছে প্লাস্টিকের পাত্র বসিয়ে সংগ্রহ করা হয় রস। প্রতি কলস রস বিক্রি হয় ৪ শ থেকে ৫শ টাকায়। প্রতি কেজি গুড়ের দাম স্থানীয়ভাবে ১শ ৮০ থেকে ২শ টাকা। মোটামুটি হিসেবে এক কলস রস দিয়ে তিন কেজি গুড় তৈরি করা হয়। সে হিসেবেই কলস প্রতি রসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এ গুড় স্বাদে কিছুটা নোনা। গুড়ের জনপ্রিয়তা ও চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়ছে ।
চাষিরা আরও জানান, গোলের রস ও উৎপাদিত গুড়ে ধানের চেয়ে বেশি আয় হচ্ছে। অনেকেই এ মৌসুমে ধানের বদলে গোল চাষে আগ্রহী হয়েছে। গোল-গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে ঘের কেটে জোয়ার-ভাটার লবণ পানি ধরে রাখা হয়। রসের পাশাপাশি গোলপাতাও বিক্রি করা যায়। আর গোল-গাছের পরিত্যক্ত ডগা জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করা হয়।
তালতলীর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুল রহমান জানান, বর্তমান সময় এ গোল-গাছের রস ও গুড় একটি সম্ভাবনাময় ফসল। যে লবণাক্ত মাটিতে ধান বা অন্যান্য ফসল ফলানো একটি চ্যালেঞ্জ; সেখানকার মাটিতে গোলগাছ ভালো হয়। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে গবেষণার মাধ্যমে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হলে এটি কাজে লাগবে।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১০৪০/নূসী