সুয়ারেজের দুই গোলেও জিততে পারলো না এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ

268

মাদ্রিদ, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ (বাসস) : লুইস সুয়ারেজের দুই গোলেও শেষ পর্যন্ত লা লিগায় সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে জিততে পারেনি এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। গত নয় ম্যাচে এই প্রথমবারের মত ২-২ গোলে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছে টেবিলের শীর্ষে থাকা এ্যাথলেটিকো। আর এতেই শিরোপা দৌঁড়ে পিছিয়ে থাকা অপর দুই জায়ান্ট বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের আশা কিছুটা হলেও জেগে উঠেছে।
ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে সান্টি মিনার গোলে ১৩ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল সফরকারী সেল্টা। কিন্তু উরুগুইয়ান তারকা সুয়ারেজ প্রথমার্ধের শেষে ও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে এ্যাথলেটিকোকে এগিয়ে দেন। ৮৯ মিনিটে ফাকুন্ডো ফেরেইরার গোলে সেল্টা আবারো সমতা ফেরালে আশা ভঙ্গ হয় স্বাগতিকদের। এই ড্রয়ে সপ্তাহের শেষে বার্সেলোনা ও মাদ্রিদের তুলনায় এ্যাথলেটিকোর পয়েন্টের ব্যবধান কমে দাঁড়িয়েছে আট। যদিও এক ম্যাচ হাতে রয়েছে দিয়েগো সিমিওনের দলের।
ম্যাচ শেষে এ্যাথলেটিকো বস সিমিওনে বলেছেন, ‘আমরা বেশ ভাল খেলেছি, কিন্তু তারা ফিনিশিংটা দুর্দান্ত করেছে। আমার কাছে মনে হয় ড্র’টাই আমাদের জন্য যথেষ্ঠ ছিল।’
এ্যাথলেটিকো যদিও এখনো পয়েন্ট টেবিলের বিচারে বেশ স্বস্তিদায়ক অবস্থানেই আছে। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সা যথাক্রমে সপ্তাহের মাঝামাঝিতে হুয়েস্কা ও রিয়াল বেটিসকে হারিয়ে নিজেদের কাজটা ঠিকই সেড়ে রেখেছে। সেখানে এ্যাথলেটিকোরও উচিত ছিল নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে পয়েন্টের ব্যবধানটা ধরে রাখা। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে গেতাফেকে হারাতে পারলেও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের সাথে তাদের ব্যবধান কমে দাঁড়াবে মাত্র পাঁচ।
ম্যাচের প্রায় পুরোটা জুড়েই ছিলেন সুয়ারেজ। কালকের দুই গোলসহ গত নয় ম্যাচে তার গোলসংখ্যা ১১ এবং পুরো মৌসুমে ১৬। ১৭ ম্যাচে এই ১৬ গোলেই তিনি ২১ শতকে লা লিগার কোন ক্লাবের হয়ে এত কম ম্যাচে এই গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন। রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেবার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর থেকে যা এক গোল বেশী।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। সোমবার দুপুরে ক্লাবের পক্ষ থেকে আরো দুটি পজিটিভ কেসের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। করোনার কারনে সম্প্রতি দলের বাইরে থাকা মারিও হারমোসো, হুয়াও ফেলিক্স ও মুসা ডেম্বেলের দলে সোমবার যোগ দিয়েছেন থমাস লেমার ও হেক্টর হেরেরা।
সিমিওনে বলেন, ‘আমাদের এর মধ্যে থেকেই সেরাটা বের করে আনতে হবে। আমাদের দলে সেই ধরনের ফুটবলার আছে যারা সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে জানে। আশা করছি সবাই এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবে।’
টেবিলের দশম স্থানে থাকা সেল্টা প্রথমার্ধে এ্যাথলেটিকোর থেকে ভাল খেলেছে। পজিশন ও বলের দিক থেকে তাদেরই আধিপত্য ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৩ মিনিটে এগিয়ে যায় সফরকারী দলটি। ডানদিক থেকে হুগো মালোর ক্রসে মিনার হেডে এগিয়ে যায় সেল্টা। পুরো ম্যাচে সেল্টার উপর খুব একটা চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি এই মুহুর্তে লা লিগার শীর্ষ দলটি। যদিও প্রথমার্ধের শেষে সুয়ারেজের গোলে সমতায় ফিরে স্বাগতিকরা। মার্কোস লোরেন্টের ক্রস থেকে সেল্টার রক্ষনভাগকে বোকা বানিয়ে সুয়ারেজ বল জালে জড়ান।
দ্বিতীয়ার্ধে মধ্যমাঠ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ফিলিপের পরিবর্তে সিমিওনে মাঠে নামান লুকাস তোরেইরাকে। আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে তার ফলও পান। রেনান লোডির ভলি থেকে সুয়ারেজ স্লাইডিং শটে এ্যাথলেটিকোকে এগিয়ে দেন। কিছুক্ষন পরেই সেল্টা প্রায় সমতা এনেই ফেলেছিল। কিন্তু ইয়াগো আসপাসকে শেষ মুহূর্তে দারুনভাবে ট্যাকল করেন ফরাসি মিডফিল্ডার জিওফ্রি কোনডোগবিয়া। ম্যাচ শেষের এক মিনিট আগে আসপাসে দুর্দান্ত এক থ্রু বল থেকে অগাস্তো সোলারির ক্রসে ফেরেইরা দুই মিটার দুর থেকে বল জালে জড়ালে সেল্টার এক পয়েন্ট নিশ্চিত হয়। আর এই গোলেই হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে এ্যাথলেটিকো।