চট্টগ্রামে করোনার সর্বনিম্ন সংক্রমণ

187

চট্টগ্রাম, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : সংখ্যা ও হারে চট্টগ্রামে করোনার সর্বনিম্ন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর পাঁচটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ২১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২০ জন ও ফটিকছড়ির ১ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৩ হাজার ৪৪৪ জন। এর মধ্যে শহরের ২৬ হাজার ১২৪ জন ও গগ্রামের ৭ হাজার ৩২০ জন।
গতকাল করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৬৯ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৬৮ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৩৬ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩১ হাজার ৫০ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ২৭০ জন এবং ঘরে থেকে ২৬ হাজার ৭৮০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ১০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ২২ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে করোনার পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরুর পর সংখ্যা ও হারে এটাই সবচেয়ে কম শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে সংখ্যায় কম ৩২ জন করে বাহক পাওয়া গিয়েছিল দু’দিন, ৩১ অক্টোবর ও ২৯ জানুয়ারি। ২৯ জানুয়ারি ১ হাজার ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণ হার ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ৩১ অক্টোবর ৭১৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। করোনায় আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়।
এছাড়া, চট্টগ্রামে করোনায় গতকালসহ একটানা ১৩ দিন কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ একজনের মৃত্যু হয় ২৪ জানুয়ারি। সেদিন নতুন ৯২ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এছাড়া, গত মাসের শেষ ১৯ দিন বাহক সংখ্যা একটানা একশ’র নিচে ছিল। চলতি মাসে একদিনই ১ ফেব্রুয়ারি করোনাবাহকের সংখ্যা শতক ছাড়িয়ে (১০৮) যায়। এর আগে চট্টগ্রামে একশ’র বেশি (১২৭ জন) ভাইরাসবাহক শনাক্ত হয় ১২ জানুয়ারি। সেদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজ সকালে বাসস’কে জানান, ‘করোনাকালের সর্বনিম্ন সংখ্যা ও হারের রেকর্ড হয়েছে। আমাদের সবসময় টার্গেট ছিল সংক্রমণ হারকে পাঁচের নিচে রাখার। ইদানিং আমরা প্রায় সেটা লক্ষ্য করছি। এছাড়া আজ টিকাদান শুরু হচ্ছে। আশা করি, এর মধ্য দিয়ে করোনার সংক্রমণকে আমরা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।’
গত ২৪ ঘণ্টার ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৮২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৭১ টি নমুনার ৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৩ টি নমুনার ১ টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ১৩৩ নমুনায় ৩ টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১০ টির ২ টিতে ভাইরাস শনাক্ত হয়। এদিন চট্টগ্রামের ২ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় দু’টিরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
তবে, গতকাল সরকারি দুই ল্যাব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) এবং বেসরকারি ল্যাব ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ০ দশমিক ৭৩ শতাংশ, চমেকে ৩ দশমিক ৩২, আরটিআরএলে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, শেভরনে ২ দশমিক ২৫ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।