বাসস দেশ-২ : কালের সাক্ষী কুমিল্লার তিন গুম্বজ মসজিদ

121

বাসস দেশ-২
তিন গুম্বজ মসজিদ
কালের সাক্ষী কুমিল্লার তিন গুম্বজ মসজিদ
।। কামাল আতাতুর্ক মিসেল।।
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : তিন গুম্বুজ ওয়ালা জামে মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজও। কুমিল্লার হোমনার তেভাগিয়া গ্রামের পাখি ডাকা, ছায়া ঢাকা, অনাবিল সুখ-শান্তির সুশীতল পরিবেশে অবস্থিত মসজিদটি। মসজিদটির ভেতর ও বাহিরে রয়েছে অপূর্ব সৌন্দর্য বিভিন্ন কারুকাজে নির্মাণ করা হয়। পুরো মসজিদ টি চুনশুরকি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। ভেতরের মিম্বরটিতে রয়েছে সুনিপুণ হাতে নির্মিত অপূর্ব কারুকাজ। যে কেউ একবার দেখলে মন ভরে যায় সৌন্দর্যের কারণে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুদৃশ্য কারুকাজ খচিত তিনটি গম্বুজ। ভেতরের দেয়ালে দৃষ্টিনন্দন অলংকরণ। নির্মাণশৈলীতে সুলতানি স্থাপত্যরীতির পূর্ণ প্রকাশ। মসজিদটি সুনিপুণ হাতে নির্মিত তবে মসজিদটিতে কোনো শিলালিপি নেই। ফলে প্রতিষ্ঠার লিখিত সময় জানা নেই কারো। স্থাপত্য রীতি দেখে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এটি ১২৫০ খ্রিস্ট্রাব্দে হুসেন শাহ সুলতানের পরবর্তী বংশধরা এ মসজিদটি নির্মাণ করেছেন। সে হিসেবে মসজিদটির বয়স ৪০০ বছরের বেশি। সুলতানী শাসন আমলে তার বংশধর হোমনায় মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করে ৩২ শতক জায়গাসহ এটি ওয়াকফ করে যান।
ওয়াক্ফ কার্যালয়ে গিয়ে তেভাগিয়া সরকারবাড়ী মসজিদটি ওয়াক্ফ স্টেট-এর ফাইলে কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট ওয়াক্ফ সহকারী প্রশাসক মনির হোসেন বাসসকে বলেন, এ ওয়াকফ স্টেটটির বহুদিন ধরে কোনো তত্ত্বাবধায়ক ছিল না। তবে মসজিদটি না ভেঙে সংস্কার করে সংরক্ষণের জন্য বলেন।
নগর গবেষণা কেন্দ্রের স্থপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, এখনো মসজিদটি যে অবস্থায় আছে, তা সংরক্ষণযোগ্য। তিনি বলেন, প্রাচীন নিদর্শন বলতে হোমনা উপজেলায় এখন এ মসজিদটিই টিকে আছে। আগে সুলতানী আমলের আরো ২/১ মসজিদ ছিল সেগুলোও কালের বির্ততনে হারিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ আছে প্রতœসম্পদের পূর্ণ তালিকা করতে হবে। তার আগে কোনো প্রাচীন ভবন ভাঙা যাবে না। অথচ একের পর এক প্রাচীন স্থাপনাগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
মসজিদটির বর্তমান কমিটির সেক্রেটারী মোঃ ইদ্রিস মিয়া বাসসকে বলেন, তৎসময়ে এলাকায় মুসলমানদের নামাজ পড়ার জন্য তেমন উল্লেখযোগ্য কোন মসজিদ ছিল না। তাই হুসেন শাহ সুলতানের বংশধরা মুসলমানদের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদটি নির্মাণ করে গেছেন। তবে বর্তমান মসজিদ কমিটিসহ স্থানীয়দের দাবি তেভাগিয়া সরকার বাড়ি মসজিদটি সংস্কার করে প্রতœসম্পদের হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজর মীর বাসসকে বলেন, সুলতালী শাসন আমলের এ মসজিদটির কথা জানা ছিল না। তবে এখন মসজিদটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে সংরক্ষণের করতে কাজ শুরু করবেন বলে জানান।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১০৫৫/নূসী