চট্টগ্রাম টেস্ট: বাংলাদেশের প্রয়োজন ৭ উইকেট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৮৫ রান

411

চট্টগ্রাম, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ৭ উইকেট । আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের করতে হবে আরও ২৮৫ রান।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ৩৯৫ রানের টার্গেটে চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১১০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে অধিনায়ক মোমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ২২৩ রান তুলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষনা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। ১১৫ রান করে আউট হন মোমিনুল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ৪৭ রান করেছিলো বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ২১৮ রানে এগিয়েছিলো টাইগাররা। প্রথম ইনিংস থেকে ১৭১ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
আজ মোমিনুল ৩১ ও মুশফিকুর রহিম ১০ রান নিয়ে খেলতে নামেন। আরও ৮ রান যোগ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার রাকিম কর্নওয়ালের বলে ব্যক্তিগত ১৮ রানে থামেন মুশফিক।
এরপর লিটন দাসকে নিয়ে দলের স্কোর ও লিড বাড়িয়েছেন মোমিনুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে ৬১তম ওভারের চতুর্থ বলে ৪১তম টেস্টে ১০তম সেঞ্চুরি পুরন করেন টাইগার দলপতি।
১৭৩তম বলে কিন অংকে পা দিয়ে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে লংগার ভার্সনে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক বনে যান মোমিনুল। পেছনে ফেলেন ৯ সেঞ্চুরি করা সতীর্থ তামিম ইকবাল।
১০টি সেঞ্চুরির সবগুলোই দেশের মাটিতে করেছেন মোমিনুল। এরমধ্যে ৭টিই করেছেন এই ভেন্যুতে (চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়াম)।
মোমিনুলের সেঞ্চুরির পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লিটন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ১১২ বলে বাউন্ডারিতে ৬৯ রানে আউট হন তিনি। পঞ্চম উইকেটে মোমিনুল-লিটন ২১১ বলে ১৩৩ রান যোগ করেন।
লিটনের বিদায়ের পরই মোমিনুলের ১১৫ রানের নান্দনিক ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার শ্যানন গাব্রিয়েলের বলে শিকার হবার আগে ১৮২ বল খেলে ১০টি চার মারেন তিনি।
এরপর মেহেদি হাসান মিরাজ ৭, তাইজুল ইসলাম ৩ রান করে আউট হন। তাইজুলের আউটের পরই ইনিংস ঘোষনা করে বাংলাদেশ। ১ রানে অপরাজিত থাকেন নাইম হাসান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই স্পিনার কর্নওয়াল-ওয়ারিকান ৩টি করে ও গাব্রিয়েল ২টি উইকেট নেন।
ইনিংস ঘোষনা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের জন্য ৩৯৫ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালোই ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৬ ওভার বিপদ ছাড়াই পার করেন দেন দুই ওপেনার অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল।
তবে ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ক্যাম্পবেলকে ২৩ রানে থামিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন মিরাজ। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর বোর্ডে ২০ রান যোগ আরও ২ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেন মিরাজ। ব্র্যাথওয়েট ২০ ও শায়নে মোসলে ১২ রান আউট হন।
এনক্রুমার বোনার ১৫ ও কাইল মায়ারস ৩৭ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন। বাংলাদেশের মিরাজ ১৬ ওভারে ৫২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৪৩০/১০, ১৫০.২ ওভার (মিরাজ ১০৩, সাকিব ৬৮, সাদমান ৫৯, ওয়ারিকান ৪/১৩৩)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ২৫৯/১০, ৯৬.১ ওভার (ব্যাথওয়েট ৭৬, ব্লাকউড ৬৮: মিরাজ ৪/৫৮)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ৪৭/৩, ২০ ওভার, মোমিনুল ৩১*, মুশফিকুর ১০) :
সাদমান ইসলাম ক সিলভা ব গাব্রিয়েল ৫
তামিম ইকবাল এলবিডব্লু ব কর্নওয়াল ০
নাজমুল হোসেন শান্ত ক ব্ল্যাকউড ব কর্নওয়াল ০
মোমিনুল হক অপরাজিত ৩১
মুশফিকুর রহিম এলবিডব্লু ব কর্নওয়াল ১৮
লিটন দাস ক মায়ারস ব ওয়ারিকান ৬৯
মেহেদি হাসান মিরাজ বোল্ড ব ওয়ারিকান ৭
তাইজুল ইসলাম বোল্ড ব ওয়ারিকান ৩
নাইম হাসান অপরাজিত ১
অতিরিক্ত (নো-৪, ও-১) ৫
মোট (৮ উইকেট, ডিক্লেয়ার, ৬৭.৫ ওভার) ২২৩
উইকেট পতন : ১/১ (তামিম), ২/১ (শান্ত), ৩/৩৩ (সাদমান), ৪/৭৩ (মুশফিক), ৫/২০৬ (লিটন), ৬/২১৪ (মোমিনুল), ৭/২২২ (তাইজুল), ৮/২২৩ (মিরাজ)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং :
কেমার রোচ : ৭-১-১৭-০ (ও-১, নো-১),
রাকিম কর্নওয়াল : ২৭-২-৮১-৩,
শ্যানন গাব্রিয়েল : ১২-০-৩৭-২,
জোমেল ওয়ারিকান : ১৭.৫-০-৫৭-৩ (নো-২),
এনক্রুমার বোনার : ২-০-১৩-০ (নো-১),
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট : ১-০-৭-০,
কাইল মায়ারস : ১-০-১১-০।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস :
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ক (অতি-ইয়াসির) ব মিরাজ ২০
জন ক্যাম্পবেল এলবিডব্লু ব মিরাজ ২৩
শায়নে মোসলে এলবিডব্লু ব মিরাজ ১২
এনক্রুমার বোনার অপরাজিত ১৫
কাইল মায়ারস অপরাজিত ৩৭
অতিরিক্ত (বা-১, লে বা-২) ৩
মোট (৩ উইকেটে, ৪০ ওভার) ১১০
উইকেট পতন : ১/৩৯ (ক্যাম্পবেল), ২/৪৮ (ব্র্যাথওয়েট), ৩/৫৯ (মোসলে)।
বাংলাদেশ বোলিং :
মুস্তাফিজ : ৪-১-১৪-০,
তাইজুল : ১৩-৮-১২-০,
মিরাজ : ১৬-২-৫২-৩ (নো-১),
নাইম : ৭-১-২৯-০।