বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

110

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-কৃষি এটলাস (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষণা বাড়ানো গেলে কৃষিপণ্যের মানোন্নয়ন এবং বাজারজাত করা সহজ হবে।
তাঁর সরকার বীজ সংরক্ষণে নরওয়ের সঙ্গে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গবেষণাকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেই এবং মনে করি, গবেষণাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।’
জাতির পিতার বক্তব্য- ‘আমার মাটি এত উর্বর যে এখানে একটা বীজ ফেললেই একটা গাছ হয়, ফল হয়। তবে, আমার দেশের মানুষ খাবারের কষ্ট পাবে কেন’-এর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে জন্য তিনি সব পদক্ষেপ নিতেন। আর এজন্য গবেষণাটা একান্তভাবে প্রয়োজন।
লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধান উৎপাদনে বিজ্ঞানীদের সাফল্যের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ সহনীয় ফসল উৎপাদনে বিজ্ঞানীদের আরো গবেষণার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কৃষিজমি রক্ষায় নদী খনন এবং ড্রেজিয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে, উল্লেখ করে তিনি দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার প্রদত্ত সহযোগিতার তথ্য ও তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বন্যা, খরা, শিলাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, উজানের ঢল, পাহাড়ী ঢল ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং বিশেষ বিশেষ ফসল চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪০২ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলেও বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করে সারাদেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে তাঁর আহ্বান পুণর্ব্যক্ত করেন।
করোনা মোকাবেলায় তাঁর সরকারের ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি ৫৩ কোটি টাকার ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজের পদক্ষেপও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তির মধ্যে ১শ’টি প্রযুক্তির আজকে যে এটলাস প্রকাশ করা হলো তাতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এটি সকলের জন্য একটা অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য প্রেরণা হিসেবে থাকবে এবং কৃষি ভিত্তিক এই দেশকে আত্মনির্ভরশীল হতে আরো সহায়তা করবে।
দেশীয় ফলমূলের ওপর আরো গবেষণার আহ্বান জানিয়ে নতুন নতুন প্রজাতি সৃষ্টিতেও বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশীয় ফলগুলো বিদেশি বিভিন্ন ফলের চাইতে বেশি সুস্বাদু হওয়ায় এগুলোর উৎপাদন ও বাজারজাত করণে আরো গবেষণার দরকার। তবে, এসব ফলের বিভিন্ন প্রজাতি উদ্ভাবনে অরিজ্যিনালিটি যেন নষ্ট না হয় সেটাও দেখতে হবে।’
‘কাজেই গবেষণা ছাড়া কোন উপায় নেই, গবেষণা আমাদের করতে হবে,’ বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর শুরু করে যাওয়া কৃষি বিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কৃষকদের ২৫ (পঁচিশ) বিঘা পর্যন্ত খাজনা মওকুফ, ১০ লক্ষাধিক কৃষকের সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার এবং ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে খাসজমি বিতরণসহ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।
কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান করে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উন্নয়ন বাজেটের ৫‘শ কোটি টাকার মধ্যে ১ শত ১ কোটি টাকা কৃষি উন্নয়নে বরাদ্দ প্রদান করে স্বনির্ভরতা অর্জনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন জাতির পিতা।
সেই পদাংক অনুসরণ করেই তাঁর সরকার দেশে প্রথমবারের মতো ‘কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ১৯৯৬’ ও ‘কৃষি নীতি ১৯৯৯’, ‘জৈব কৃষি নীতি ২০১৬’, ‘জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮’ এবং ‘জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০২০’ প্রণয়ন করেছে।
১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার থেকে শুরু করে কৃষক কল্যাণে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কৃষক উপকরণ কার্ড বিতরণ এবং বর্গাচাষীদের জন্য জামানতবিহীন কৃষি ঋণ প্রদানের উদ্যোগ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
সারের মূল্য হ্রাসসহ কৃষকের উৎপাদন খরচ নিম্নপর্যায়ে রাখতে ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সার, বিদ্যুৎ ও ইক্ষু খাতে কৃষকদের মোট ৭৫ হাজার ৮ শত ১৫ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি মুজিববর্ষে দেশের সকল গৃহহীন জনগণের প্রত্যেককে অন্তত একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়ার মাধ্যমে ঠিকানা করে দেওয়ায় তাঁর অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান অব্যাহত রাখার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৬১৬/আরজি