চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যুশূন্য টানা দশম দিন

166

চট্টগ্রাম, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যুশূন্য টানা দশম দিন অতিবাহিত হলো। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টার পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় নতুন ৭২ জনের দেহে। সংক্রমণের হার ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল বুধবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ৭২ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৬ জন এবং আট উপজেলার ১৬ জন। ফলে এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যাক্তির সংখ্যা ৩৩ হাজার ২৮৭ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৫ হাজার ৯৯৯ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ২৮৭ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে বাঁশখালীতে ৫ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৪ জন, রাউজানে ২ জন এবং ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, লোহাগাড়া ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। জেলায় মৃতের সংখ্যা ৩৬৯ জনই রয়েছে। এর মধ্যে শহরের ২৬৮ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার সনদ দেয়া হয় ৫০ জনকে। জেলায় মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩০ হাজার ৯৩৫ জনে। এদের ৪ হাজার ২৪৫ জন হাসপাতালে ও ২৬ হাজার ৬৯০ জন বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। কোয়ারেন্টাইনে গতকাল যুক্ত হন ১০ জন ও ছাড়পত্র নেন ১৫ জন। বর্তমানে ১ হাজার ২৫৪ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গতকালের মৃত্যুশূন্য দিনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় একটানা দশ দিন কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ একজনের মৃত্যু হয় ২৪ জানুয়ারি। সেদিন নতুন ৯২ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ছিল ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এছাড়া, একটানা ১৯ দিন বাহক সংখ্যা একশ’র নিচে থাকলেও গত সোমবার ১০৮ জনের নমুনায় জীবাণু পাওয়া যায়। এর আগে চট্টগ্রামে একশ’র বেশি ভাইরাসবাহক শনাক্ত হয় ১২ জানুয়ারি। সেদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এছাড়া, তিন মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২৯ জানুয়ারি। এদিন ১ হাজার ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণ হার ছিল করোনাকালের সর্বনি¤œ ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৮১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৮টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ৩৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে ৮০ জনের নমুনায় ১৯ জন ভাইরাসবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবে ২৩টি নমুনার ৩টিতে জীবাণুর অস্তিত্ব মিলে।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবের মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪০টি এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ১১ ও ১টিতে করোনা জীবাণুর প্রমাণ মিলে। এদিন চট্টগ্রামের ৫৩টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরি ও বেসরকারি ল্যাব শেভরনে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ২ দশমিক ২০ শতাংশ, চমেকে ৫ দশমিক ৯০, চবিতে ২৩ দশমিক ৭৫, সিভাসুতে ১৩ দশমিক ০৪, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৭ দশমিক ৫০, মা ও শিশু হাসপাতালে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে শূন্য শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।