দল বদলের শেষ দিনে রক্ষণভাগ শক্তিশালী করলো লিভারপুল

510

লন্ডন, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : শালকে থেকে ওজান কাবাক ও প্রিস্টন থেকে বেন ডেভিসকে দলে ভিড়িয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেদের রক্ষণভাগ শক্তিশালী করেছে প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোর শেষ দিনে এ দুটি চুক্তি সম্পন্ন করে অল রেডরা।
যদিও এজন্য তাদের জাপানীজ এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার টাকুমি মিনামিনোকে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত ধারে সাউদাম্পটনের কাছে ছেড়ে দিতে হয়েছে। শেষ দিনে অনেকটাই নিরব দলবদলের বাজারে লিভারপুলের এই তিনটি চুক্তি ছাড়া তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ট্রান্সফার হয়নি। জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডো সাধারানত খেলোয়াড় ছেড়ে দেবার একটি বাজার হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু রক্ষনভাগে সাম্প্রতিক ইনজুরির তালিকা বেশ দীর্ঘ হওয়ায় কাবাক ও ডেভিসকে দলে নিতে বাধ্য হয়েছে লিভারপুল।
ভার্জিল ফন ডাউক, জো গোমেজ ও জোয়েল মাটিপসহ প্রায় সব নির্ভরযোগ্য সিনিয়র ডিফেন্ডারই বর্তমানে ইনজুরিতে রয়েছেন। মধ্যমাঠ থেকে সেন্টার-ব্যাক পজিশনে নিজেকে দারুণভাবে প্রমান করা ফ্যাবিনহোও ইনজুরিতে পড়েছেন। যে কারনে ক্লপকে বাধ্য হয়েই অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনকে নীচে নামিয়ে আনতে হয়েছে।
এ্যানফিল্ড ছেড়ে জাপানীজ মিডফিল্ডার মিনামিনোর সাউদাম্পটনে যাওয়া অনেককেই বিস্মিত করেছে। যদিও তার এই চুক্তিটা ডেডলাইন শেষ হবার পর সম্পন্ন হেেছ। তবে জানা গেছে সেইন্টসরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সময়ের আগেই জমা দিয়েছিল। সাউদাম্পটন ম্যানেজার রালফ হ্যাসেনহাটেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মৌসুমের বাকি সময়ের জন্য টাকুমিকে দলে স্বাগত জানাতে পেরে আমি দারুন আনন্দিত। দলের এ্যাটাকিং পজিশনে সে বাড়তি শক্তি যোগাবে। এই মুহূর্তে আমাদের জন্য সঠিক মানের একজন খেলোয়াড়কেই আমরা দলে ভিড়িয়েছি। মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে সে আমাদের দলের জন্য আলাদা একটি গুরুত্ব বহন করবে বলেই আমার বিশ^াস।’
লিভারপুল ম্যানেজার জার্গেন ক্লপ বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছিলেন দলকে টেনে তুলতে হলে সেন্টার-ব্যাক পজিশন মজবুত করতে হবে। ট্রান্সফার উইন্ডোর একেবারে শেষ ঘন্টায় দুজন ডিফেন্ডারকে দলে ভিড়িয়ে
শেষ পর্যন্ত ক্লপ তার ইচ্ছাপূরণ করতে পেরেছেন।
তুরষ্কের ২০ বছর বয়সী তরুণ কাবাক ধারে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত চুক্তি করেছেন। প্রাথমিক ভাবে ধারের চুক্তি বাবদ তাকে ১ মিলিয়ন পাউন্ড দেয়া হয়েছে। মৌসুমের শেষে তাকে স্থায়ীভাবে কিনতে হলে ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করতে হবে। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে শালকেতে যোগ দেবার আগে কাবাক স্টুটগহার্টে খেলেছেন। সব মিলিয়ে দুই বছর তিনি বুন্দেসলিগায় ছিলেন। এর আগে গ্যালাতাসারের হয়ে তার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তুরষ্কের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে সাতটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন।
এদিকে ২৫ বছর বয়সী ডেভিস প্রাথমিক ভাবে ৫ লাখ পাউন্ডে লিভারপুলে যোগ দিয়েছেন। করোনা মহামারীর কারনে ক্লাবের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ক্লপ দ্বিতীয় টায়ারের অনেকটা অপরিচিত খেলোয়াড়দের প্রতি বেশী মনোযোগী ছিলেন। এ সম্পর্কে ক্লপ বলেছেন, ‘একটি বিষয় স্পষ্ট যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আমরা হয়ত প্রিস্টনের দিকে তাকাতাম না। কিন্তু ডেভিসের খেলা দেখে আর ক্লাবের আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা তাকে দলভূক্ত করেছি।’
প্রিস্টনের হয়ে ১৪৫টি ম্যাচ খেলে দুই গোল করেছেন ডেভিস। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় টায়ারের দলটির হয়ে তার পেশাদার ফুটবলের অভিষেক হয়েছিল।
করোনা মহামারীর কারনে বিশে^র অন্যান্য ক্লাবগুলোর মত ইংলিশ ক্লাবগুলোও ব্যপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ২০১২ সালে সর্বশেষ জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করা হয়েছিল। বড় ছয়টি ক্লাব এই শীতকালীন এই দলবদলে একেবারেই নীরব ছিল।
আর্সেসাল তাদের জার্মান ডিফেন্ডার স্কোড্রান মুস্তাফিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। স্বল্প মেয়াদী চুক্তিতে মুস্তাফি শালকেতে যোগ দিয়েছেন।
জেডসন ফার্নান্দেস টটেনহ্যামে তার হতাশাজনক মেয়াদ কাটিয়ে গ্যালাতাসারেতে যোগ দিয়েছেন। প্রথমদিকে এই মিডফিল্ডারের বেনফিকায় ধারে খেলার কথা ছিল। পরবর্তীতে যা বাতিল হয়ে যায়।
রেলিগেশনের খরায় থাকা ওয়েস্ট ব্রুম তুরষ্কের মিডফিল্ডার ওকে ইউকুসলুকে ধারে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত সেল্টা ভিগো থেকে দলে ভিড়িয়েছে। এছাড়াও আর্সেনাল থেকে এ্যাইন্সলে মেইটল্যান্ড-নাইলসকেও ধারে দলের নেবার জন্য রাজী হয়েছে ওয়েস্ট ব্রুম।
ইকুয়েডরের মিডফিল্ডার মোয়েসিস কেইসেডোকে ৪ মিলিয়ন পাউন্ডে ইন্ডিপেনডিয়েন্টে ডেল ভালে থেকে দলভূক্ত করেছেন ব্রাইটন।
আর্সেনাল মিডফিল্ডার জো উইলককে ধারে চুক্তিবদ্ধ করেছেন নিউক্যাসল। এদিকে ম্যাগপাইয়ের রাইট-ব্যাক ডিআন্দ্রে ইয়েডলিন স্থায়ী চুক্তিতে গ্যালাতাসারেতে যোগ দিয়েছেন।
সান্দারল্যান্ডের সাবেক ফরোয়ার্ড জোস মায়াকে ফরাসি ক্লাব বর্দু থেকে দলে ভিড়িয়ছে ফুলহ্যাম।
বোর্নমাউথের স্ট্রাইকার জোস কিংকে দলে নিয়েছে এভারটন।