পরিবেশ দূষণকারী সকল শিল্প ইউনিটে ‘ইটিপি’ স্থাপন বাধ্যতামূলক : শিল্পমন্ত্রী

690

ঢাকা, ১১ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা হিসেবে দেশের উৎপাদনমুখী প্রায় সকল শিল্প কারখানায় ‘জিরো পল্যুশন’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে এবং এর আওতায় পরিবেশ দূষণকারী সকল শিল্প ইউনিটে বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
উচ্চ পর্যায়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক থ্রিআর ফোরাম উপলক্ষে ভারতের মধ্য প্রদেশের ব্রিলিয়ান্ট কনভেনশন সেন্টারে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত ‘থ্রিআর এবং নির্মল বায়ু-বায়ু দূষণে সার্কুলার ইকোনোমির ভূমিকা’ শীর্ষক প্লেনারি সেশনে সভাপতিত্বকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্প কার্বন নির্গমন ও জলবায়ু সহিষ্ণু অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ, পরিবহন ও শিল্পখাতে গ্রীণ হাউজ গ্যাস নির্গমন ৫ থেকে ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশে পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়ন এবং সবুজ পণ্য উৎপাদনের উদ্যোগ জোরদার করা হয়েছে।’
পরিবেশ সুরক্ষা ও বায়ু দূষণ প্রতিরোধে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে শিল্প উৎপাদন ও গৃহস্থালীর কাজে জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি জনপ্রিয় করার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪০ লাখেরও বেশি গৃহে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। এসব সোলার প্যানেল থেকে উৎপাদিত সৌর বিদ্যুৎ প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ ব্যবহার করছে।’
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প কারখানায় বর্জ্য ও কাঁচামালের অপচয় হ্রাস, বর্জ্য পুনর্ব্যবহার এবং বর্জ্য পুনরায় ব্যবহারের জন্য পুন:প্রক্রিয়াকরণের কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এর স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ান অব দ্যা আর্থ’ এ ভূষিত হয়েছেন।’
এর আগে আমির হোসেন আমু ‘থ্রিআর এবং বিশুদ্ধ পানি -পানি দূষণে সার্কুলার ইকোনোমির ভূমিকা’ শীর্ষক প্লেনারি সেশনে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশে পানি দূষণ প্রতিরোধ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং পানি পুনর্ব্যবহারে সরকার গৃহিত উদ্যোগ ও নীতি তুলে ধরেন। তিনি পানি ও বায়ু দূষণ প্রতিরোধে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বহুজাতিক উদ্যোগ জোরদারের পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট ইনিশিয়েটিভের সমন্বয়ক ড. সান্দ্রা এম মাজুনিক্সের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পৃথকভাবে তিনটি মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পূর্বদিল্লী মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার ড. রানবির সিং, থাইল্যান্ডের এআইটি রিজিওনাল রিসোর্স সেন্টার ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের ঊর্ধ্বতন কর্মসূচি বিশেষজ্ঞ গুলভারতো বরনগান এবং সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট এজেন্সির পরিচালক অং সু সান।
এতে থাইল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক সুনি পিয়া পানপং, পাকিস্তানের শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল গাফ্ফার ও ইকোনোমিক রিসার্স ইন্সটিটিউট ফর আসিয়ান অ্যান্ড ইস্ট এশিয়ার প্রতিনিধি মিসিকাজু কুজিমা আলোচনায় অংশ নেন।