চট্টগ্রামে করোনা কমছে

302

চট্টগ্রাম, ২৯ জানুয়ারি ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের বাহক সংখ্যা টানা তৃতীয় দিনের মতো পঞ্চাশের নিচে শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণের হার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ৯১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শনাক্ত ৪৮ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৩ জন ও তিন উপজেলার ৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারী ও সীতাকু-ে ২ জন করে এবং রাউজানে ১ জন রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্তের সংখ্যা এখন ৩২ হাজার ৮৮১ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৫ হাজার ৬৭২ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ২০৯ জন।
গতকাল করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৬৯ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৬৮ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৪০ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৬৭৪ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ১৮৩ জন এবং বাসা থেকে ২৬ হাজার ৪৯১ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ১০ জন ও ছাড়পত্র নেন ২৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩১৭ জন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের বাহক সংখ্যা একটানা ষোড়শ দিনের মতো একশ’র নিচে এবং টানা তিন দিন পঞ্চাশের নিচে নামলো। গত ২৭ জানুয়ারি ৪৯ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে। সংক্রমণ হার ছিল ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ২৬ জানুয়ারি ১ হাজার ৪৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ। চলতি মাসে করোনা শনাক্তের সংখ্যা পঞ্চাশের নিচে নেমেছিল আরো একদিন ২৩ জানুয়ারি। সেদিন ৩৮ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। হারও ছিল অনেক কম ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ একশ’র বেশি করোনাভাইরাসবাহক শনাক্ত হয় ১২ জানুয়ারি। সেদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। করোনাকালের সর্বনি¤œ সংক্রমণ হার ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ নির্ণিত হয় ১৩ জানুয়ারি। এদিন ৫৩ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়। গত চার দিন করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৫৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৮৮ জনের নমুনার মধ্যে ৮ জন করোনা শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৮ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৮টি নমুনার সবক’টিরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ১১০ নমুনা পরীক্ষা করে ১০টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪১টি নমুনার মধ্যে ১০টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১২টির ১টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের ১২ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই ফল নেগেটিভ আসে। তবে ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ, চমেকে ৯ দশমিক ০৯, চবি’তে ৩২শতাংশ, শেভরনে ৯ দশমিক ০৯, ইম্পেরিয়ালে ২৪ দশমিক ৩৯ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে কারো নমুনায় কোনো জীবাণু পাওয়া গেলেও আরটিআরএলে পরীক্ষিত ৮ নমুনা নেগেটিভ পাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। কারণ এ ল্যাবে শুধুমাত্র কোভিড হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নমুনা পরীক্ষা হয়।