বাজিস-৪ : নীলফামারীতে জমেছে কোরবানির পশুর হাট

177

বাজিস-৪
নীলফামারী-পশুরহাট
নীলফামারীতে জমেছে কোরবানির পশুর হাট
নীলফামারী, ১৬ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। বিভিন্ন হাটবাজারে ভারতীয় গরুর আমদানি না থাকায় কদর বেড়েছে দেশী গরুর।
জেলা শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় গরুর হাটে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। ওই হাটে কোরবানির জন্য ৩২ হাজার টাকায় একটি দেশী ষাঁড় গরু কিনেছেন জেলা শহরের নিউ বাবুপাড়া গ্রামের খতিবর রহমান (৪৫)। ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে গরু কিনতে পেরে তিনি বেজায় খুশি। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে খুব সহজেই গরু কিনতে পেরেছি। আমার যেটুকু সামর্থ্য ছিল তা দিয়েই পছন্দের গরুটা কিনতে পেরেছি।’
অপরদিকে ওই গরুর বিক্রেতা জেলা শহরের বড়বাজার এলাকার মিজানুর রহমান (৪২) আশানুরূপ দামে গরু বিক্রি করতে পেরে খুশি। তিনি বলেন, ‘এবারে ভারতীয় গরুর তেমন আমদানি না থাকায় আশানুরূপ দাম পেয়েছি। বাজার এমন থাকলে গরু পালনকারীরা হতাশ হবেন না।’
অপরদিকে জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের ক্রেতা আশরাফ আলী (৫০) বলেন, ‘গরুর দাম সহনীয় পর্যায় রয়েছে। স্থানীয় হাট-বাজারে দেশী গরু প্রচুর আমদানি হচ্ছে। ক্রেতারা সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে গরু কিনতে পেরে যেমন সন্তুষ্ট, তেমনি বিক্রেতারাও লাভের মুখ দেখছেন।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা করা গরুর আমদানি অনেক, তাতে ক্রেতারা খুশি। এখন কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু ক্রেতারা পছন্দ করছেন না। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় ক্রেতারা যে যার সাধ্য এবং পছন্দ অনুযায়ী গরু কিনছেন।’
সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের খামারী মিজানুর রহমান (৩৫) এবারে কোরবানির জন্য গরু মোটাতাজা করেছেন ৪৫টি। তিনি বলেন, ‘বাজারে এপর্যন্ত ভারতীয় গরুর আমদানি ঘটেনি। তাই গরু বিক্রি করে খামারীরা লাভের মুখ দেখছেন। এভাবে চললে আরো অনেকে গরু পালনে আগ্রহী হবেন। তাতে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের সূত্রমতে, জেলায় ছোটবড় মিলে গরু, ছাগল, ভেড়ার খামার রয়েছে ২৩ হাজার ৬৬০টি। এর মধ্যে গরুর ১৭ হাজার ৬০০টি, ছাগল পাঁচ হাজার ৪৩০ ও ভেড়া ৬৩০ টি। এর মধ্যে অনেকে বড় আকারে এবং অনেকে বাড়িতে ছোট আকারের খামারে এসব পশু পালন করছেন।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোনাক্কা আলী বলেন, ‘এবারে যে পরিমান সুস্থ্য পশু মজুত আছে তাতে কোরবানির পশু সংকটের কোনও আশংকা নেই। প্রতিটি হাটবাজারে জেলা প্রাণি সম্পদের পক্ষে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। পশু বিক্রি করে পালনকারীরা যে দাম পাচ্ছেন তাতে লোকসান হবে না।’
তিনি জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে জেলায় ৬১ হাজার ৬৯৯টি গবাদি পশু প্রস্তত হয়েছে। এর মধ্যে গরু ৪৭ হাজার ৯৯৫ ও ছাগল, ভেড়া ১৩ হাজার ৭০৪ টি। ২০১৭ সালে গরু, ছাগল, ভেড়া মিলে ৬১ হাজার ৬৬৭ টি পশু কোরবানি হয়েছে।
৫৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল কাজী আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাজারে ভারতীয় গরু গত বারের তুলনায় নগন্য, অর্থাৎ নেই বললে চলে। আমরা ঈদ উপলক্ষে সীমান্ত এলাকা কঠোর নজরদারীতে রেখেছি। আশা করি ভারতীয় গরু ছাড়াই দেশীয় গরু দিয়ে কোরবানি সম্পন্ন হবে।
বাসস/সংবাদদাতা/১২৩৫/মহ/নূসী