বাসস ক্রীড়া-১৩ : শেষ বিকেলে এলোমেলো দক্ষিণ আফ্রিকা

137

বাসস ক্রীড়া-১৩
ক্রিকেট-করাচি টেস্ট
শেষ বিকেলে এলোমেলো দক্ষিণ আফ্রিকা
করাচি, ২৮ জানুয়ারি ২০২১ (বাসস) : পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচি টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ২৯ রানে এগিয়ে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। তারপরও শেষ বিকেলে ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে প্রোটিয়ারা।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ২২০ রানের জবাবে ৩৭৮ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ১৫৮ রানের লিড পায় পাকিস্তান। পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দিন শেষে ৪ উইকেটে ১৮৭ রান তুলে লিড নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৭৫ থেকে ১৮৭ রানে পৌঁছাতে ৩ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা।
বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ফাওয়াদ আলমের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ৩০৮ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিলো স্বাগতিক পাকিস্তান। ফলে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ৮৮ রানে এগিয়েছিলো পাকিস্তান।
আগের দিন পাকিস্তানের হাসান আলি ১১ ও অভিষেক হওয়া নোমান আলি ৬ রান নিয়ে শেষ করেছিলেন।
আজ পাকিস্তানের স্কোর বোর্ডে ১৫ রান যোগ হবার পরই বিদায় নেন হাসান। ৩৩ বলে ২১ রান করা হাসানকে আউট করে টেস্ট ক্রিকেটে দুইশত উইকেট পুর্ন করেন।
দলীয় ৩২৩ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে হাসান আউটের পর ক্রিজে আসেন শেষ ব্যাটসম্যান ইয়াসির শাহ। ব্যাট হাতে নেমে ওয়ানডে স্টাইলে খেলতে থাকেন তিনি। তার আক্রমনাত্মক ব্যাটিংএ ছন্দ হারায় দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়ে পাকিস্তানের লিড বড় করছিলেন নোমান ও ইয়াসির।
পাকিস্তানের শেষ উইকেট তুলে নিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। শেষ পর্যন্ত ৩৭৮ রানে পাকিস্তানের শেষ উইকেট নিতে পারেন প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজ। ৪৯ বলে ২৪ রান করা নোমানকে শিকার করেন মহারাজ। তার ইনিংসে ৩টি চার ছিলো। মারমুখী মেজাজে খেলা ইয়াসির ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ৩৭ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। দক্ষিণ আফ্রিকার রাবাদা-মহারাজ ৩টি করে এবং নর্টি-এনগিডি ২টি করে উইকেট নেন।
ফাওয়াদের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও টেল-এন্ডারদের দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংস থেকে ১৫৮ রানের লিড পায় পাকিস্তান। তাই বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেই দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে হয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
দলকে ভালো শুরু এনে দেয়ার পথেই হাটচ্ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার আইডেন মার্করাম ও ডিন এলগার। ১৬ ওভারে ৪৮ রান তুলে ফেলেন তারা। তবে ১৭তম ওভারের প্রথম বলে দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার ইয়াসির। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২৯ রানে আউট হন এলগার।
এলগারকে হারানোর পর দারুন এক জুটি গড়েন আরেক ওপেনার মার্করাম ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। পাকিস্তানের বোলারদের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে দলের স্কোর দেড়শ পার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লিড এনে দেন মার্করাম ও ডুসেন।
লিড এনে দিয়ে দলকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যাবার ভিত গড়ার পথেই ছিলেন মার্করাম ও ডুসেন। তবে তাদের পথে বাঁধা সৃষ্টি করেন পাকিস্তানের ইয়াসির। প্রতিপক্ষের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গার পর পাকিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন তিনি।
টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি করা ডুসেনকে শিকার করেন ইয়াসির। ফলে ৩১০ বলে মার্করাম-ডুসেনের ১২৭ রানের জুটির সমাপ্তি ঘটে। ১৫১ বলে ৫টি চারে নিজের ইনিংসটি সাজান ডুসেন।
ডুসেনকে শিকার করে শেষ বিকেলে দারুনভাবে ম্যাচে ফিরে পাকিস্তান। সাবেক অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিসকে ১০ রানে আউট করে ইনিংসে নিজের তৃতীয় উইকেট শিকার করেন ইয়াসির। ইয়াসির সাথে অন্যপ্রান্ত দিয়ে আক্রমনে থাকা নোমানও চেপে বসেন দক্ষিণ আফ্রিকার উপর। উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া মার্করামকে ৭৪ রানে তুলে দিনের শেষটা রাঙিয়ে তুলেন নোমান।
ইয়াসির-নোমানের ঘুর্ণিতে ১ উইকেট ১৭৫ রানে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা, ৪ উইকেটে ১৮৭ রানে দিন শেষ করে। ২২৪ বলে ১০টি চারে ৭৪ রান করেন মার্করাম।
নাইটওয়াচম্যাচ মহারাজ ২ ও অধিনায়ক কুইন্টন ডি কক কোন রান না করেই অপরাজিত আছেন। পাকিস্তানের ইয়াসির ৫৩ রানে ৩ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
দক্ষিণ আফ্রিকা : ২২০ ও ১৮৭/৪, ৭৫ ওভার (মার্করাম ৭৪, ডুসেন ৬৪, ইয়াসির ৩/৫৩)।
পাকিস্তান : ৩৭৮/১০, ১১৯.২ ওভার (ফাওয়াদ ১০৯, ফাহিম ৬৪, রাবাদা ৩/৭০)।
বাসস/এএমটি/১৯২০/স্বব