বাসস দেশ-৩৭ : সব মানুষকে বীমার আওতায় আনতে হবে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

128

বাসস দেশ-৩৭
আইডিআরএ-চেয়ারম্যান
সব মানুষকে বীমার আওতায় আনতে হবে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান
ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস): সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে বীমার আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. মো. মোশাররফ হোসাইন। তিনি বলেন, বীমা খাত নিয়ে হতাশার দিক থাকলেও এই খাত ভেতরে ভেতরে অনেক ভালো কাজ করে যাচ্ছে।
আজ রোববার ‘দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিন’ আয়োজিত বীমা খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ সব কথা বলেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের সহযোাগি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের এমডি মো. জালালুল আজিম।
প্যানেল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. কাজিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স একাডেমির চিফ ফ্যাকাল্টি মেম্বার এস এম ইব্রাহিম হোসাইন।
রাজধানীর ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক একেএম রাশেদ শাহরিয়ার। সঞ্চলনা করেন পত্রিকার চিফ রিপোর্টার গিয়াস উদ্দিন।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসাইন বীমা খাতকে একটা উল্লেখযোগ্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করে বলেন, এই খাতকে একটা বিশ্বাসযোগ্য স্থানে দাঁড় করাতে চাই যেন বীমা খাতের ওপর মানুষের আস্থা তৈরি হয়। তিনি বলেন, বীমা খাত সবসময় মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে। মানুষ যেন ভালো থাকে এটাই বীমা খাতের চাওয়া। দেশের সব মানুষ বীমার আওতাভুক্ত হলে এই খাত যেমন এগিয়ে যাবে তেমনি মানুষও এর দ্বারা উপকৃত হবে ।
এ সময় তিনি বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে বীমা খাতের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান মাত্র শুন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ। ভারতের অর্থনীতিতে তাদের বীমা খাতের অবদান ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, এমনকি ইন্দোনেশিয়াতে বীমা খাতের অবদান ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
ড. মো. মোশাররফ হোসাইন আরো বলেন, বাংলাদেশ একটি টেকসই অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা বীমা খাত নিয়ে তার সমান্তরালে হাটতে পারিনি। তবে আমাদের অর্থনীতি সম্ভাবনাময়। আমরা যোগ্যতার সাথে এগিয়ে গেলে দেশের অর্থনীতি অবদান রাখতে পারবো।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান বলেন, দেশের সকল পেশার সকল মানুষকে বীমার আওতায় আনতে বীমা খাতকে আস্থা অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, এই খাতে সমস্যা যেমন আছে তেমন সম্ভাবনাও আছে। যোগ্য মানুষদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে এই খাত এগিয়ে যাবে। বীমা খাতে এমন একটা জায়গা সৃষ্টি করতে হবে যেন মেধাবীরা এই অঙ্গনে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী হয়। তবে এ খাত নিয়ে মানুষের মধ্যে অনাস্থা এবং ভুল ধারণা রয়েছে যা দূর করতে বীমা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গুরুত্বের সাথে কাজ করতে হবে।
প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স একাডেমির চিফ ফ্যাকাল্টি মেম্বার এস এম ইব্রাহিম হোসাইন বলেন, বীমার ব্যপারে গ্রাহককে আলোকিত করতে হবে- তাহলে বীমা খাত টিকে থাকবে ও এগিয়ে যাবে। আর প্রলুব্ধ করলে বীমা খাতে সাময়িক সফলতা আসলেও দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকবে না। সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারলে এ খাতের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকবে। যথাযথভাবে প্রতিটা গ্রাহককে বীমা সম্পর্কে গাইড লাইন দিতে পারলে এ খাত দ্রুত উন্নত হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি এই খাতে নারীদের অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, নারীদের যদি সম্পৃক্ত করা যায় তাহলে গ্রাহক বেড়ে যাবে। তাই নারীদেরকে যত বেশি সম্পৃক্ত করা যাবে তত বীমা খাতের জন্য কল্যাণ হবে। দেশের সব মানুষের সকল সম্পদকে বীমার আওতায় আনতে আইডিআরএ, সরকার এবং এসোসিয়েশনকে ভূমিকা নেওয়ার জন্য আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, শ্রীলংকা ১৯২৯ সালে তাদের কৃষিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কৃষি বীমা চালু করে আর আমরা এখনও পারিনি। তাই আমাদের কৃষি বীমা চালুর ব্যাপারে ভাবা উচিৎ।
বাসস/এএসজি/আরআই/১৯৩৫/-স্বব