চট্টগ্রামে করোনা কমছে

272

চট্টগ্রাম, ২২ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : বন্দর নগরী চট্রগ্রামে ক্রমান্বয়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা কমছে। টানা নয় দিন আক্রান্তের সংখ্যা একশ’র নীচে রয়েছে। গত তিন দিনে করোনায় কেউ মারা যায়নি চট্রগ্রামে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয় ৮৮ জন। সংক্রমণের হার ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ৮৮ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৭৯ জন এবং ছয় উপজেলার ৯ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩২ হাজার ৪৮৭ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৫ হাজার ৩২৭ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ১৬০ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাউজান, হাটহাজারী ও পটিয়ায় ২ জন করে এবং আনোয়ারা, চন্দনাইশ ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় কোনো রোগীর মুত্যু হয়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৬৭ জনই রয়েছে। এর মধ্যে শহরের ২৬৬ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থতার সনদ দেয়া হয় ৫৪ জনকে। ফলে জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩০ হাজার ৩৬০ জনে। এদের ৪ হাজার ১১০ জন হাসপাতালে ও ২৬ হাজার ২৫০ জন বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে নতুন যুক্ত হন ২০ জন ও ছাড়পত্র নেন ৪৪ জন। বর্তমানে ১ হাজার ৩৯৮ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১২ জানুয়ারি করোনাভাইরাসে ২ রোগীর মৃত্যুর পর গত ১০ দিনে দুই দিনে দুই রোগীর মৃত্যু হয়। ১৮ জানুয়ারি এক রোগী মারা যান। নতুন বাহক পাওয়া যায় ৯৮ জন। সংক্রমণ হার ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। ১৪ জানুয়ারি একজন মারা যান। নতুন ৯১ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ মেলে। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত তিনদিন কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। সংখ্যার বিচারে একশ’র নিচে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের টানা নবম দিন ছিল গতকাল। এর মধ্যে একদিন করোনাকালে চট্টগ্রামে সর্বনি¤œ সংক্রমণ হারের রেকর্ড হয় ১৩ জানুয়ারি। এদিন এক হাজার ৭৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণের হার ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৬০২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৯টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ১৬ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। সংক্রমণ হার ১৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৩৫টি নমুনায় ২টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ১০টি নমুনার ৩টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে। সংক্রমণ হার ৩০ শতাংশ।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ১৪৭টি নমুনার মধ্যে ১১টি, ইম্পেরিয়ালে ৫১টি নমুনায় ১০টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সংক্রমণের হার যথাক্রমে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ ও ২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।
চট্টগ্রামের ১১৩ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে পরীক্ষায় সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।