বাসস ক্রীড়া-১ : নাপোলিকে হারিয়ে ইতালিয়ান সুপার কাপের শিরোপা জিতলো জুভেন্টাস

127

বাসস ক্রীড়া-১
ফুটবল-ইতালিয়ান সুপার কাপ
নাপোলিকে হারিয়ে ইতালিয়ান সুপার কাপের শিরোপা জিতলো জুভেন্টাস
তুরিন, ২১ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : আন্দ্রে পিরলোর অধীনে প্রথম শিরোপা জয় করেছে জুভেন্টাস। বুধবার নাপোলিকে ২-০ গোলে পরাজিত করে ইতালিয়ান সুপার কাপের শিরোপা জয় করেছে জুভেন্টাস।
রেগিও এমিলিয়ায় ৬৪ মিনিটে কর্ণার থেকে মৌসুমের ২০তম গোল করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। নাপোলি অধিনায়ক লোরেঞ্জো ইনসিগনে ৮০ মিনিটে পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করেন। সেই সুযোগে ইনজুরি টাইমে আলভারো মোরাতা ব্যবধান দ্বিগুন করার পাশাপাশি দলের শিরোপা নিশ্চিত করেন। সাবেক ক্লাবের দায়িত্ব নেবার পাঁচ মাসের মধ্যে ৪১ বছর বয়সী পিরলো জুভেন্টাসের হয়ে প্রথম শিরোপা জয় করলেন। এই ক্লাবের হয়ে খেলোয়াড়ী জীবনে চারটি লিগ শিরোপা জয় করেছেন পিরলো। জুভেন্টাস ও এসি মিলানের হয়ে তিনবার ইতালিয়ান সুপার কাপের শিরোপা জয়ী পিরলো কাল ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘কোচ হিসেবে প্রথম শিরোপা জয় করার আনন্দই আলাদা, খেলোয়াড়ী জীবনের অনুভূতির থেকে এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটা আরো বেশী আনন্দদায়ক।’
গত বছর ল্যাজিওর সাথে হেরে রানার্স-আপ হবার পর নবমবারের মত জুভেন্টাস এই শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখালো। রোনাল্ডো বলেছেন, ‘এই শিরোপা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন এটি মৌসুমের বাকি সময়টা আমাদেরকে আত্মবিশ^াস যোগাবে।’
জুভেন্টাস বর্তমানে সিরি-এ লিগের শীর্ষে থাকা এসি মিলানের থেকে ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে। গত সপ্তাহে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্টার মিলানের কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল জুভেন্টাস। রোনাল্ডো আরো বলেন, ‘সিরি-এ শিরোপাও আমাদের জয় করা সম্ভব। মিলান ও ইন্টার খুবই শক্তিশালী দল। কিন্তু এখনো অনেক ম্যাচ বাকি এবং আমরা এখনো আশাবাদী।’
২০০৬ সালে বিশ^কাপের শিরোপা একসাথে জয় করার পর পিরলো ও নাপোলি কোচ জেনারো গাত্তুসোর একসাথে দেখা হলো। ইতালিয়ান এই দুজন একসাথে মিলে এক দশকে এসি মিলানের হয়ে দুটি সিরি-এ ও দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছেন।
অক্টোবরে করোনা ভাইরাসের কারনে তুরিন সফরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে নাপোলির সাথে এই মৌসুমে দেখা হয়নি জুভেন্টাসের। ঐ ম্যাচটি আয়োজনের নতুন তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। পিরলো বলেছেন, ‘গাত্তুসোর জন্য আমি দু:খিত। কিন্তু ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ম্যাচে পরাজয়ের পর আমাদের জন্য এই জয়টা জরুরী ছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যেও অন্য ধরনের আকাঙ্খা ছিল। আমরা তাদেরকে দেখাতে চেয়েছিলাম আমরাও জিততে চাই।’
ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে হুয়ান কুয়াড্রাডোর করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সুসংবাদ পায় জুভেন্টাস। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই প্রথমবারের মত কুয়াড্রাডো জুভেন্টাসের হয়ে মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন। মাপেই স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে নাপোলি ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটা পেয়েছিল। ৩০ মিনিটে হার্ভিং লোজানোর ডাইভিং হেড দারুন দক্ষতায় রুখে দেন জুভ গোলরক্ষক ওজিচেচ সিজিসনি। ফেডেরিকো চিয়েসার স্থানে ফেডেরিকো বার্নারডেশী বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসেই দলকে এগিয়ে নিতে মূল ভূমিকা রাখেন। রোনাল্ডোর শট ডিফেন্ডার কোস্টাস মানোলাসের ডিফ্লেকটেড হয়ে আত্মঘাতি গোলের থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পায়। কিন্তু পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী রোনাল্ডো শেষ পর্যন্ত আর কোন ভুল করেননি। ৬৪ মিনিটে কর্ণার থেকে প্রাপ্ত বলে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো পর্তুগীজ ফরোয়ার্ড জুভেন্টাসকে এগিয়ে দেন। এটি তার মৌসুমের ২০তম গোল। ওয়েস্টন ম্যাককিনি ডি বক্সের ভিতর ড্রিয়েস মার্টিনসকে ফাউল করলে নাপোলি সমতায় ফেরার সুযোগ পায়। কিন্তু ৮০ মিনিটে ইনসিগনের স্পট কিক পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে গেলে হতাশ হতে হয় নাপোলিকে। শেষের দিকে সিজিসনির আরো একটি দারুন সেভ করে জুভেন্টাসের শিরোপা জয়ের পথ নিশ্চিত করেন। ইনজুরি টাইমে মোরাতার গোলে ইতালিয়ান সুপার কাপের শিরোপা ঘরে তুলে ইতালিয়ান জায়ান্টরা।
৪৩ বছর বয়সী গাত্তুসো বলেছেন, ‘আমরা সবাই মিলেই আজ হেরেছি। এটা শুধুমাত্র লোরেঞ্জোর পেনাল্টির কারনে নয়। প্রথমার্ধটা মোটেই ভাল কাটেনি। জুভেন্টাসও যে খুব একটা বিপদে আমাদের আজ ফেলতে পেরেছে সেটাও বলতে পারছি না। আমরা হয়ত আরো একটু ভাল খেলতে পারতাম। কিন্তু সব মিলিয়ে আজ আমরা শিরোপা জয় করতে পারিনি, এটাই মূল কথা।’
বাসস/নীহা/১৫১০/-স্বব